কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ি। এতে দুর্ভোগ আরো বেড়েছে বানভাসীদের। দীর্ঘ সময় ধরে পানিবন্দি থাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পনির চরম সংকটে পড়েছেন দুর্গতরা।
এদিকে চারণভূমি তলিয়ে থাকায় ও গো-খাদ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নিজেদের খাবারের পাশাপাশি গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা।
এবারের বন্যায় জেলার ৫০টি ইউনিয়নের ২শ ৯৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়। সরকারি হিসেবে এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে সোয়া লাখ মানুষ।
বন্যা কবলিত এলাকায় ২শ ৯৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এখনও বন্ধ রয়েছে পাঠদান।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির টিনা, কাউন, পটল, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও পাট এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ জেলায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ফলস তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, জেলায় ১১শ ৫৭টি মাছের খামার ভেসে যায়। এতে ১১শ ৬৩ জন মাছ চাষী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতির পরিমান ১শ ৮০ কোটি টাকা।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য ৫৩৮ মেট্রিক টন চাল, ৩৬ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা গো-খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।