কুয়াকাটায় পর্যটকদের যাতায়াতের পথে ময়লার ভাগাড়

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় নেই কোনো নির্ধারিত ডাম্পিং ব্যবস্থা। তাই পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বাসাবাড়ি, আবাসিক হোটেলের পচা বাঁশি খাবারসহ ময়লা আবর্জনা ও প্লাস্টিক পলিথিন বর্জ্য খোলা জায়গায় রাস্তার দু’পাশে ফেলে রাখছে। পর্যটকদের যাতায়াতের পথে সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন শরীফপুর এলাকা যেন ময়লার ভাগাড়। এমনকি সেখানে মারা যাওয়া কুকুর, বিড়ালও মাটিচাপা না দিয়ে ফেলে রাখা হয়।

এতে পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে, পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য পড়েছে হুমকির মুখে। আর ওই পথে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। এদিকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা দুষিত বায়ুর কারণে মুখ ফিরিয়ে নিলেও এ বিষয়ে নজর নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। তাই ময়লার এই ভাগাড় দ্রুত অপসারনের দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কুয়াকাটায় বেশ পর্যটকের চাপ বেড়েছে। প্রতিনিয়ত আসছে দেশি-বিদেশি পর্যটক। আর গড়ে উঠছে নতুন নতুন হোটেল মোটেল। কিন্তু কুয়াকাটা পৌরসভার নেই স্থায়ী কোনো ডাম্পিং ব্যবস্থা। তাই বাসাবাড়ি, আবাসিক হোটেলের বর্জ্য ও ময়লা গাড়িতে করে প্রতিদিন শরীফপুরের একটি খোলা জায়গায় ফেলে রাখছে। ময়লাগুলোকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখার কারণে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এর পাশ থেকেই যেতে হয় পর্যটন স্পট লেম্বুরবন, তিন নদীর মোহনা ও শুটকি পল্লী এলাকায়। ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধ এড়াতে পর্যটকরা নাক চেপে ওই স্থান অতিক্রম করেন।
তবে পরিবেশবিদরা বলেছেন, খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলে রাখা পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। বর্ষায় ওই বর্জ্য নদী নালায় মিশে জলজ প্রাণীরও ক্ষতি করে। এছাড়া দেশি বিদেশি পর্যটক এবং এলাকার জনস্বার্থ রক্ষার জন্য আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত বলে তারা মনে করেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কলাপাড়া আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মান্নু জানান, এভাবে খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেললে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা করা দরকার।

এ ব্যাপারে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই বড়-বড় শহরের চেয়েও বেশী বর্জ্য তৈরি হয় এখানে। কিন্তু ময়লা ফালানোর ডাম্পিং স্থান না থাকার কারণে একটু সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছি। তবে আমরা আগামি এক বছরের মধ্যে আশাকরি বর্জ্য ফালানোর জন্য ডাম্পিংয়ের স্থান তৈরী করতে পারবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights