গোপালগঞ্জে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধা জানাতে জনতার ঢল

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধা জানাতে জনতার ঢল নেমেছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রাতিষ্ঠানে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এরপর পুলিশ সুপার আল -বেলী আফিফা ফুল দিয়ে বঙ্গমাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তারপর জেলা আওয়ামী লীগ, গোপালগঞ্জ পৌরসভা, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা, জেলা আইনজীবী সমিতি, বিসিক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, জেলা কারাগার, সমাজসেবা অধিদপ্তর, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, এলজিইডি, ডাব্লিউ ডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, শেখ সোহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বিভিন্ন দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বঙ্গমাতার প্রতি জন্মবার্ষিকীর বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বঙ্গমাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জনতার ঢল নামে। সকাল পৌনে ১১টা পর্যন্ত চলে শ্রদ্ধা নিবেদন। ফুলে ফুলে ছেঁয়ে যায় বঙ্গমাতার প্রতিকৃতি। সকাল সাড়ে ১০টায় গোপালগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবনী নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, গোপালগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুদ্দোজা বদর ও গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমিনুল ইসলাম।

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মো. গোলাম কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক আজহারুল ইসলাম, জাতীয় মহিলা পরিষদের গোপালগঞ্জ জেলার চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার রুবেল সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম।

বেলা সাড়ে ১১ টায় শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি মিলনায়তনে সেলাই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দুঃস্থ ও অসহায় ১০৫ জন মহিলার আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। এছাড়া ১২০ জন মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হয় নগদ অর্থ। এরপর সেখানে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ী শিশুকিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুবল আলমসহ অন্যান্য অতিথিরা।

গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় কোর্ট জামে মসজিদ, কেন্দ্র্রীয় সার্বজনীন কালিবাড়িসহ জেলার অন্যান্য মসজিদ, মন্দির এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বঙ্গমাতার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুবল আলম বলেন, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, সেলাই মেশিন বিতরণ, নগদ টাকা বিতরণ, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও মসজিদ, মন্দির, উপসনালয়ে প্রর্থনার মধ্য দিয়ে বঙ্গমাতার ৯৩তম জন্মবার্ষিকী তার নিজ জেলা গোপালগঞ্জে বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা, ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল রেনু। তার পিতার নাম শেখ জহুরুল হক ও মাতার নাম হোসনে আরা বেগম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights