গোল উৎসবে মেতে শিরোপার আরও কাছে বার্সেলোনা

অনলাইন ডেস্ক

পয়েন্ট টেবিলের তলানির দলের মাঠে শীর্ষ দলের খেলা। সবচেয়ে কম গোল করা ও হজম করা দুই দলের ম্যাচ। মাঠের খেলায় পড়ছিল না এর ছাপ। তবে শেষ পর্যন্ত জ্বলে উঠলেন রবের্ত লেভানদোভস্কি, আনসু ফাতি, ফেররান তরেসরা। এলচেকে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল বার্সেলোনা।

প্রতিপক্ষের মাঠে এলচে’র বিরুদ্ধে শনিবার (০২ এপ্রিল) রাতে লা লিগার ম্যাচে ৪-০ গোলে জিতেছে শাভি এর্নান্দেসের দল। জোড়া গোল করেছেন লেভানদোভস্কি। জালের দেখা পেয়েছেন ফাতি ও তরেস। বল দখলে রেখে শুরু থেকেই এলচেকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। কিন্তু স্বাগতিকদের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারছিল না কাতালান ক্লাবটি।

২০তম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগে এগিয়ে যায় শাভির দল। মার্কোস আলোনসোর ফ্রি কিকে চমৎকার হেডে রোনাল্দ আরাউহো খুঁজে নেন লেভানদোভস্কিকে। পোলিশ এই স্ট্রাইকার শুরুতে বাঁ পায়ে শট নিতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি। পরে ডান পায়ের শট দূরের পোস্ট দিয়ে খুঁজে নেন জাল।
পিছিয়ে পড়লেও রক্ষণে গুটিয়ে যায়নি এলচে। অনেকটা সময় ধরে বার্সেলোনাকে চাপে রাখা তারা। একে একে আদায় করে নেয় ছয়টি কর্নার। তবে সেভাবে মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের পরীক্ষা নিতে পারেনি স্বাগতিকরা।

৪০তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন লেভানদোভস্কি। স্পর্শে জোর একটু বেশি থাকায় শেষ পর্যন্ত আর বলের নাগাল পাননি তিনি। তিন মিনিট পর আবার দলকে হতাশ করেন পোলিশ এই স্ট্রাইকার। তরেসের দারুণ ক্রসে খুব কাছ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।

৪৫তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন জুলস কুন্দে। গাভির ক্রসে তার বুলেট গতির শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ওমার মাসকারেল। প্রথমার্ধে বার্সেলোনার ৫ শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। ২৯ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা এলচের চার শটের একটি ছিল লক্ষ্যে, সেটিও খুব একটা ভাবাতে পারেনি সফরকারী গোলরক্ষককে।

৫১তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন লেভানদোভস্কি। গোলের জন্য শট না নিয়ে তিনি কাট ব্যাক করেছিলেন ফাতিকে লক্ষ্য করে। কিন্তু পার করতে পারেননি ডিফেন্ডারদের। একটু পরে প্রতি আক্রমণে দারুণ সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন হোসে আনহেল কারমোনা। কিন্তু দৌড় শুরু করার একটু পরেই চোট পান পায়ে। নষ্ট হয় সুযোগ, সঙ্গে মাঠও ছাড়েন কারমোনা।

৫৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফাতি। প্রতি আক্রমণে তরেসের কাছ থেকে নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে অনেকটা এগিয়ে যান তিনি। এই সময়ে কেউ সেভাবে চ্যালেঞ্জ জানায়নি তাকে। অন্য প্রান্তে জায়গা করে নিয়েছিলেন লেভানদোভস্কি। তবে তাকে না বাড়িয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন ফাতি। অক্টোবরের পর এই প্রথম লিগে জালের দেখা পেলেন তিনি।

৬৬তম মিনিটে স্কোর লাইন ৩-০ করে ফেলেন লেভানদোভস্কি। মাঝমাঠে এলচের একজনের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে বাড়ান গাভি। বল পায়ে ডি বক্সে ঢুকে সঙ্গে লেগে থাকা দুই জনকে এড়িয়ে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে জাল খুঁজে নেন লেভানদোভস্কি। চলতি আসরে এটি তার সপ্তদশ গোল।

৭০তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান তরেস। নিজেদের অর্ধ থেকে লেভানদোভস্কির বাড়ানো বল ধরে, ডি বক্সের ঢুকে পোস্ট ঘেঁষে ঠিকানা খুঁজে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি এলচে গোলরক্ষক। ৮৩তম মিনিটে জালে বল পাঠান লেভানদোভস্কি। তবে আক্রমণের শুরুতে তিনিই একজনকে ফাউল করায় গোল মেলেনি। দুই মিনিট পর এলচে অধিনায়ক ফিদেলের হেড ফেরে ক্রসবারে লেগে।

যোগ করা সময়ে হোসানের বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে দেন টের স্টেগেন। এতে আসরে ২০তম ম্যাচে জাল অক্ষত রাখতে পারল কাম্প নউয়ের দলটি। ২৭ ম্যাচে ২৩ জয় ও দুই ড্রয়ে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ খেলা রিয়াল মাদ্রিদ ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights