চট্টগ্রামে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি বাড়তি বাস ভাড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার তাড়া বাড়ছে। চট্টগ্রাম শহর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা। কিন্তু বাসের বাড়তি ভাড়ার কারণে বাড়ি যেতে ব্যয়ের হিসাব মিলাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। টিকেট বিক্রেতারাও মানুষ বুঝে বাড়তি ভাড়া আদায়ের ছক কষেছেন নিজেদের মতো করে। এতে বিপদে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। কারণ ঈদ শেষে ফের ফিরতে হবে বাড়তি ভাড়া দিয়েই। যার কারণে বাস ভাড়া তদারকিতে জেলা প্রশাসনকে নজর দেওয়ারও দাবি জানান যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর অলংকার মোড়ে টিকেট কাটার ভোগান্তিটা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে রংপুর, দিনাজপুর, খুলনা, বরিশালের টিকেট পেতে বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। অধিকাংশ টিকেটে বাড়তি ৫০০ টাকা চাচ্ছেন বাস কাউন্টারের কর্মীরা। অন্যদিকে তাদের সহযোগিতা করতে কমিশন ভিত্তিক নিয়োগে আছে ২০ থেকে ৫০ জনের মতো কর্মী। তারা মানুষ দেখলেই তাকে জরুরিভিত্তিতে টিকেট কাটিয়ে বাসে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বাসের টিকেট কাটতে না পেরে নিতাই সাহা নামের একজন বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুইজনই চট্টগ্রামে এসে থাকি, কাজ করি। ঈদের ছুটিতে বাড়ি (রংপুর) যাওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন ১২’শ টাকার টিকেট এখন ১৭’শ টাকা চাচ্ছে। এ কারণে এখন ভাবছি, যাবো কি-না।
চিলাহাটির টিকেট কাটা সালাম নামে এক যাত্রী বলেন, আমরা তো ঈদের ছুটি ছাড়া বাড়ি যাওয়ার আর সুযোগ নেই। তাই বাড়তি ভাড়াতেই স্ত্রী আর ছেলেদের পাঠিয়ে দিলাম। ঈদের দিন আসতে আসতে টিকেটের দাম আরও বাড়াতে পারে। কিন্তু ছুটি না পাওয়ার আমি যেতে পারছি না। আবার এরাও এডভান্স (অগ্রিম) টিকেট দিচ্ছে না।
শান্ত পরিবহনের টিকেট বিক্রয়কর্মী আহসান সম্রাট বলেন, আমরা কোনো বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি না। যে ভাড়া নেওয়ার সেটাই নেওয়া হচ্ছে। আর গাড়ি আসার উপর আমরা টিকেট বিক্রি করছি। গাড়ি আসতে দেরিও হতে পারে। তাই ঈদে কোনো অগ্রিম টিকেট কাটার ব্যবস্থা করা হয়নি।
আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভাড়া চার্ট অনুযায়ী নেওয়া হচ্ছে। এরপরও আমরা পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসেছি। আমরা ভাড়ার টাকার সঙ্গে ৫০ টাকা বাড়তি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। যাওয়ার সময় ভর্তি করা যাত্রী নিয়ে গেলেও ফিরে আসার সময় খালি আসতে হয়। সেই বিবেচনায় এ প্রস্তাব দিলে সেটি কেউ অনুমোদন করেনি। তবে মৌন সম্মতি দিয়েছেন আর কি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, প্রতিবছরই এ ধরনের সমস্যা হয়। এবার যেন এমন কিছু না হয়, সে জন্য আমরা বাস মালিকদের সঙ্গে বসেছি। কোথাও যদি কোনো অনিয়মের তথ্য পাই, আমরা অবশ্যই সেখানে যাবো। ঈদ যাত্রায় জনসাধারণের যেন কোনো ভোগান্তি না হয়, সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি থাকবে।