চড়কাণ্ডের পর আলোচনায় সেই বিতর্কিত মন্তব্য, কী লিখেছিলেন কঙ্গনা?

অনলাইন ডেস্ক
বলিউড তারকা এবং লোকসভা নির্বাচনে সদ্য নির্বাচিত বিজেপির এমপি কঙ্গনা রানাওয়াতকে চড় মেরেছেন সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) একজন নারী কনস্টেবল কুলবিন্দর। গত বৃহস্পতিবার হিমাচল প্রদেশের মান্ডি থেকে চণ্ডিগড় বিমানবন্দর হয়ে দিল্লি ফেরার পথেই ঘটে এ ঘটনা।

এ ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে কী কারণে ওই নারী কনস্টেবল কঙ্গনাকে থাপ্পড় মেরেছে? মূলত ২০২০ সালে কঙ্গনার একটি টুইটার পোস্ট (বর্তমান এক্স) বিতর্কের সূত্রপাত। বলা হচ্ছে, ভারতে ২০২০ সালের কৃষক বিক্ষোভের সময় বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা। এ কারণে তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন কুলবিন্দর। এই ক্ষোভ থেকেই তিনি কঙ্গনাকে চড় মেরেছেন।

চড় মারার ঘটনার পরের একটি ভিডিওতে কুলবিন্দরকে ২০২০ সালের কৃষক বিক্ষোভের সময়কার কঙ্গনার বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়ে তীব্র আপত্তি জানাতে শোনা যায়। তিনি বলেন, সে সময় কঙ্গনা বলেছিলেন, কৃষকেরা অর্থের বিনিময়ে দিল্লিতে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভ করার জন্য তাদের ১০০ বা ২০০ রুপি করে দেওয়া হয়েছে। সে সময় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কুলবিন্দর মা-ও ছিলেন।
কঙ্গনা কী মন্তব্য করেছিলেন
২০২০ সালে ভারতে ব্যাপক হারে কৃষক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময়ে মোদি সরকার একটি বিতর্কিত কৃষি আইন করলে তা বাতিলের জন্য বিক্ষোভের ডাক দেয় দেশটির কৃষকরা। তারা দিল্লি অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন। বিক্ষোভের মুখে পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালে বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিল করে সরকার।

কৃষক বিক্ষোভ চলাকালে কঙ্গনা তার টুইটারে (বর্তমান নাম এক্স) একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। পোস্টে তিনি কৃষক বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক বয়স্ক নারীকে দিল্লির শাহিনবাগ আন্দোলনের সুপরিচিত মুখ বিলকিস বানো হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন, যা ছিল ভুল। একই পোস্টে কঙ্গনা দাবি করেছিলেন, ১০০ রুপির বিনিময়ে এই নারী (বিলকিস) বিক্ষোভে বসেছেন।

তবে বিলকিস বানো বিক্ষোভ ঠিকই করেছিলেন তবে তা কৃষক আন্দোলনে নয়। তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রত্যাহার এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তৈরির বিরোধিতা করে দিল্লির শাহিনবাগে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণ অবরোধ-বিক্ষোভ অংশ নিয়েছিলেন। টানা ১০১ দিনের এই বিক্ষোভের অন্যতম আলোচিত মুখ ছিলেন বিলকিস। সে সময় তার বয়স ছিল ৮২ বছর। তিনি শাহিনবাগের ‘দাদি’ নামে পরিচিতি পান। পরবর্তী সময়ে তিনি টাইম সাময়িকীর ২০২০ সালের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পান।

ওই সময়ে পোস্টটি দেয়ার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন কঙ্গনা। ভুয়া তথ্য ছড়ানোর দায়ে তাকে বেশ কয়েকটি আইনি নোটিশ দেয়া হয়। অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়। পরে পোস্টটি মুছে দেন কঙ্গনা। তবে বৃহস্পতিবার চড় খাওয়ার ঘটনার পর তার সেই পোস্ট নিয়ে নতুন করে আলোচনা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights