জনপ্রতিনিধিদের জনসেবায় মনোযোগী হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
জনপ্রতিনিধিদের জনসেবায় মনোযোগী হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “আপনারা (জনপ্রতিনিধি) জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনগণের সেবা যদি আপনারা নিশ্চিত করতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে আপনাদের ভোটের চিন্তা থাকবে না।”

বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র এবং কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। জনগণের সেবা যদি আপনারা নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে ভবিষ্যতে আপনাদের ভোটের চিন্তা থাকবে না। মানুষই আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে।”
দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতি, মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস থেকে সবাই যেন দূরে থাকে।

আওয়ামী লীগ সরকার সুষম উন্নয়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে টানা চারবারের সরকার প্রধান বলেন, প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি, আমাদের উন্নয়নের সমস্ত লক্ষ্য গ্রামের মানুষ। সে কথা মাথায় রেখেই আমাদের প্রত্যেক গ্রামে সমান উন্নয়ন হবে।

আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের আগে যেটা দরকার, জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করেছে, তখন এ দেশের মানুষ অন্তত পক্ষে এটুকু পেয়েছে যে, সরকার জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে। যে কারণে বাংলাদেশের উন্নয়নটা সম্ভব হয়েছে।

নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, জনগণের উন্নত সেবা প্রদান, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা হল সরকারের লক্ষ্য। ইতোমধ্যে আমরা ঘোষণা দিয়েছি- আমার গ্রাম আমার শহর। অর্থাৎ গ্রামের মানুষ সকল নাগরিক সুবিধা পাবে।

তিনি বলেন, আজকে বিগত ১৫ বছরে আমি অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকে যার বয়স ১৫ বছর, সে হয়তো ভাবতেও পারবে না যে, ১৫ বছর আগে ২০০৯ সালের আগের বাংলাদেশ কী অবস্থায় ছিল! আজকের বাংলাদেশে সেখান থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে; পাঁচ গুণ আমরা বৃদ্ধি করেছি। সব থেকে বড় কথা দারিদ্র্যের হার আমরা পেয়েছিলাম ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ। আমরা তা কমিয়ে ১৮ দশমিক সাত শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল যে, অন্তত আমরা ১৬ বা ১৭ শতাংশে নামিয়ে আনব। যেটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থান।

তিনি বলেন, আমরা সেটা করতে পারতাম, যদি কোভিড-১৯ এর মহামারী না দেখা দিত। আর এই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হতো, নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন), বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি; প্রত্যেকটা খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। তেলের দাম বেড়ে গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, গ্যাসের দাম বেড়েছে, পরিবহন খরচ বেড়েছে— এগুলো যদি না হতো, আমরা কিন্তু আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে পারতাম। আমাদের দারিদ্র্যের হার আরও কমাতে পারতাম।

অতি দরিদ্র প্রায় ২৫ ভাগের ওপরে ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেটা আমরা পাঁচ দশমিক ছয় ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এত দ্রুত অতি দরিদ্রের হার কমানো, আমার মনে হয়, পৃথিবীর কোনও দেশ এটা পারেনি। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে, এটা আওয়ামী লীগই পারে। তার কারণ হচ্ছে, আমরা খুব পরিকল্পিতভাবে পরিকল্পনা নিয়েছি এবং আমরা লক্ষ্য স্থির করে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমাদের এখন লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশে কেউ আর ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, অতি দরিদ্র বলে কেউ থাকবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights