জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ অন্ধকার : কাজী ফিরোজ রশীদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পূর্বনির্ধারিত আগামীকালের পরিচিত সভা স্থগিত করেছে রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি।

শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউট মিলনায়তনে এ সভা আহ্বান করেছিল দলটি। একইদিনে কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটে দলের বর্ধিত সভা ডেকেছে জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। এ নিয়ে গত কয়েকদিন দুটি গ্রুপের মাঝে বিরাজ করছিল উত্তেজনা। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থও হয়েছেন দুই অংশের নেতারা।

এমন অবস্থায় শুক্রবার দুপুরে বিজয়নগরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি।
সংবাদ সম্মেলনে পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এই তীব্র তাপপ্রবাহে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করা তামাশার সামিল বলে আমরা মনে করি। তাই আগামীকালের পরিচিত সভা স্থগিত করে আজ শুক্রবার থেকে পাঁচ দিনব্যাপী ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে ১০টি স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনসাধারণের মাঝে আমরা পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করব।

তিনি বলেন, আজ অর্থনৈতিক ও ব্যাংক খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বড়বড় ব্যাংক ছোট ছোট ব্যাংক গিলে খাচ্ছে। বড় বড় কোম্পানিগুলোতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল লাগিয়ে তা গিলে খাওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে আজ সংসদে কথা হচ্ছে না। আগে জাতীয় পার্টিকে বলা হতো গৃহপালিত বিরোধী দল। আর এখন বলা হয় কৃতদাস। এ পার্টির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। জাতীয় পার্টির ওপর মানুষের আস্থা নেই। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি এ পার্টিকে কীভাবে গুছিয়ে রাখা যায়।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আগামীতে দুটি মার্কা ছাড়া অন্য মার্কা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননও নিজেদের মার্কা বাদ দিয়ে নৌকায় উঠেছেন। তারপরও অনেককে ডুবে যেতে হয়েছে। নির্বাচন এখন নির্বাচনে নেই। একটি দলের মধ্যেই নির্বাচন হয়।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করে বড়লোক হওয়ার একমাত্র পথ রাজনীতি। জীবনে যাদের টিন ছিল না তারা আজ প্রাডো জিপ চালায়। রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন। রাজনীতি নিয়ে অপরাজনীতি চলছে। এভাবে রাজনীতি শূন্য হলে দেশ ও রাজনীতি ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, রাজনীতি সবসময় করা যাবে। কিন্তু জনদুর্ভোগ এবং কষ্টের সময় রাজনীতি চলে না। জনগণের কল্যাণের জন্য আমরা রাজনীতি করি। তাই তাদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের প্রথম কাজ। আমরা পাঁচ দিনব্যাপী প্রতিদিন দশটি স্পটে তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ ভ্রাম্যমাণ ও অসহায় রিকশাচালক এবং দিনমজুরদের পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করব।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, গোলাম সারোয়ার মিলন এবং সুনীল শুভ রায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নূরু, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, শফিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান টিটু, জামাল রানা, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহাজাদা, শেখ মাসুক রহমান, সারফুদ্দিন আহমেদ শিপু, দপ্তর সম্পাদক আবুল হাসান আহমেদ জুয়েল প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে বিজয়নগরে জনসাধারণের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করেন নেতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights