জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের নির্দেশ উপাচার্যের

গাজীপুর প্রতিনিধি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে পরিপালনের পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সন্তানদের টাকায় পরিচালিত হয়। মানচিত্রসম এই বিদ্যাপীঠ পরিচালনায় একটি পয়সাও যেন অপচয় না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।

রবিবার গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে অর্থ ও হিসাব দপ্তর এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা দপ্তরের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এই নির্দেশনা প্রদান করে উপাচার্য।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের অর্থ ও হিসাব এবং নিরীক্ষা উইং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের দ্রুত সেবা প্রদানে এই দপ্তর দুইটির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে দ্রুত সেবা প্রদানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যাতে খুব অল্প সময়ে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা সেবা পায়। দ্রুত সেবা প্রদানে স্থায়ী বুনিয়াদ করতে আর্থিক ব্যবস্থাপনা আরও আধুনিকায়নে কনসাল্টেন্ট নিয়োগ করতে হবে। আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে এসব কাজ যেন শেষ হয়। কোনো অবস্থাতেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আর্থিক বিধি-বিধানের ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।

আর্থিক বিধি-বিধান সম্পর্কে প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অধিকতর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর)সহ আরও বিধি-বিধান বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এর মধ্য দিয়ে আরও বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

অধিক মানুষে অধিক কাজ হয়-এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, আমরা বিশ্বমানের শিক্ষার কথা বলছি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই) এর সামনের যে পৃথিবী সেই পৃথিবীতে অধিক মানুষের অধিক কাজ করার সুযোগ থাকছে না। কারণ বিশ্বে অনেক বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে এআই। একটি বাড়ি বানানো থেকে শুরু করে বিমান বানানো এমনকি যুদ্ধাস্ত্র বানানো সবই চলে যাচ্ছে এআইয়ের হাতে। আপনার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ল্যাপটপকে, প্রোগ্রামটাকে। আইসিটি যেভাবে ডেভেলপ হয়েছে, নতুন নতুন প্রোগ্রাম যেভাবে আসছে সেগুলোতে দক্ষতা বাড়াতে হবে। ফলে আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। অল্প মানুষের অধিক কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তা নাহলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমাদের টিকে থাকা কঠিন হবে। কাজের পরিধি কমে যাবে। আইসিটির উপর আমাদের দখল বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আপনি যদি মনে করেন অধিক সমস্যার সমাধান অধিক জনবল সে জায়গাটি আর থাকছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শুদ্ধাচার দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভাটি সঞ্চালনা করে রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শুদ্ধাচার দপ্তরের পরিচালক জয়ন্ত ভট্টাচার্য্য, তথ্য প্রযুক্তি (আইসিটি) দপ্তরের পরিচালক মো. মুমিনুল ইসলাম, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক মো. সাজেদুল হক, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা দপ্তরের পরিচালক মো. শফিক উল্লাহ্সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights