জাবিতে ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিতে বাড়ছে অসন্তোষ

রুবেল হোসাইন, জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ ১০ মাস আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে নেই কোনো হল কমিটি। একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও নতুন কমিটি করতে ‘গড়িমসি’ করায় পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। এতে নতুন নেতৃত্ব যেমন তৈরি হচ্ছে না, তেমনি সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের মাঝে তৈরি হচ্ছে গ্রুপিং, বাড়ছে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ।

জানা যায়, গেল বছরের ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আকতারুজ্জামান সোহেলকে সভাপতি ও দর্শন বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে মাত্র দুই সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। নতুন কমিটি গঠিত হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নিয়ম থাকলেও ১১ মাস পর গঠিত হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সবশেষ ২০১৩ সালের অক্টোবরে গঠিত হয় হল কমিটি। এরপর আর কোনো হল কমিটি গঠন করা হয়নি। এরই মধ্যে প্রায় সব হলের নেতারা পড়ালেখা শেষ করে বেরিয়ে গেছে। ফলে কার্যত নেতৃত্বশূন্য জাবির হল ছাত্রলীগ।

ফলে দীর্ঘসূত্রিতায় অনেক কর্মী সাংগঠনিক পরিচয় ছাড়াই তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতৃত্ব মানতে নারাজ সংগঠনটির অধিকাংশ নেতাকর্মী। তাদের একাংশই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৃতীয় গ্রুপ নামে পরিচিত।
এদিকে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় ধাপের ৩০০ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করেছে প্রশাসন। যেখানে টাকার ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রুপভিত্তিক দৌড়-ঝাপ করতে দেখা গেছে।

এ পরিস্থিতিতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দ্রুত নতুন কমিটি দিয়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

একাধিক ছাত্রলীগ নেতা অভিযোগ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাওয়ায় শীর্ষ নেতারা এখন সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা ভাবেন না, তারা নিজেদের আর্থিক স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। টেন্ডার ও নিয়োগ বাণিজ্যের ভাগবাটোয়ারায় নেতারা কর্মীদের বিবেচনায় নেয় না। যার কারণে হল ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক বিভিন্ন উপগ্রুপ এখন দৃশ্যমান। নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করা প্রয়োজন। নইলে নির্বাচনকালীন মাঠে কেউ থাকবে না।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যখন নতুন কমিটি ঘোষণা করবে তখনই আমরা দায়িত্ব ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। এখন আমরা হল কমিটি গঠনের জন্য কাজ করছি। শীঘ্রই হল সম্মেলনের মাধ্যমে হল কমিটি ঘোষণা করা হবে।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights