জৌলুস হারিয়েছে লালবাগ গরুর হাট, ক্রেতারা ছুটছেন খামারিদের কাছে

রংপুরের সবচেয়ে বড় পশুর হাট নগরীর দক্ষিণ প্রান্তে লালবাগের হাট। এই হাট আগের জৌলুস হারিয়েছে। হাটে গরুর সংখ্যাও কম। ক্রেতা নেই বললেই চলে। গরু বিক্রেতাদের অভিযোগ, ক্রেতারা খামারিদের কাছ থেকে সরাসরি গরু কিনছেন। এ ছাড়া আশপাশের গ্রামীণ হাটগুলোতে যাচ্ছেন। ফলে লালবাগের হাটে আগের মতো ক্রেতা নেই।

রবিবার দুপুরে হাটে গিয়ে দেখা গেছে এই দৃশ্য।

লালবাগ হাটে সর্বোচ্চ একটি গরুর দাম উঠেছে ৪ লাখ। তবে ৬৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের গরুর বেশি চাহিদা রয়েছে। এর পরে ৯০ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত গরুর চাহিদা বেশি।
গরু বিক্রেতা আশিকুর রহমান জানান, তার বাড়ি নগরীর মর্ডান মোড় এলাকায়। তিনি হাটে ৪টি গরু বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। দুপুর দুইটা পর্যন্ত কোনো ক্রেতা আসেনি। লালবাগ হাটের আগের ঐতিহ্য নেই। কেনা-বেচা নেই বললেই চলে। তিনি বলেন, বাবা-দাদা এই হাটে গরু বিক্রি করতেন। তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তিনি লালবাগে গরু বিক্রি করতে এসেছেন। এখানে বিক্রি না হলে অন্য হাটে যাবেন।

বিক্রেতা বাবর আলী, আব্দুল কালামসহ কয়েকজন জানান, গত বছর হাট কারমাইকেল কলেজ মাঠে সম্প্রসারিত করা হয়েছিল। গরুর আমদানি কম হওয়ায় এবার কারমাইকেল কলেজ মাঠে হাট সম্প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

নগরীর কামালকাছনা এলাকার রিঙ্কু মিয়া বলেন, হাটে গিয়ে গরু কিনতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই খামারে গিয়ে গরু পছন্দ করেছি। তারাই কোরবানির একদিন আগে গরু বাড়িতে পৌঁছে দেবেন। তাই কোনো চিন্তা নেই। তার মতো আরও বেশ কয়েকজন একই কথা বলেন, হাটে গিয়ে গরু কিনতে ভোগান্তি হওয়ায় তারা খামার থেকে গরু কিনবেন।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালবাগ হাট না জমলেও পার্শ্ববর্তী তারাগঞ্জ, বেতগাড়ি, বড়িরহাট শঠিবাড়ি, বদরগঞ্জ, বড়বাড়িসহ অন্যান্য গ্রামীণ হাটে গরু বেচা-কেনা জমে উঠেছে।

রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে রংপুর বিভাগে পশুর চাহিদা রয়েছে ১৩ লাখ ১৮ হাজার ১১৭টি। তবে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২১ লাখ ৫২ হাজার ৩১৯টি পশু। চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে আরও আট লাখের বেশি পশু। বিভাগের আট জেলার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬২ জন খামারি রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights