টোল যাচ্ছে প্রভাবশালীদের পকেটে

ফরিদপুর প্রতিনিধি
মধুখালীতে মধুমতী নদীর ওপর গড়াই সেতুর টোল অবৈধভাবে আদায় করছে স্থানীয় একটি চক্র। ফলে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হাতছাড়া হচ্ছে সরকারের। গড়াই সেতু পেরিয়ে গড়িয়াদহ হয়ে বালিয়াকান্দি সড়কে যাতায়াত করা যানবাহন থেকে নেওয়া টোলের টাকা প্রভাবশালীদের পকেটে ঢুকছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তারা বিষয়টি জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর ও যশোরের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে ১৯৯১ সালে ৫০ কোটি টাকায় ফরিদপুর-মাগুরার সীমান্তবর্তী মধুমতী নদীতে গড়াই সেতু (কামারখালী ব্রিজ নামে পরিচিত) তোলা হয়। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়ায় অবস্থিত টোলঘরে সেতুটির টোল নেওয়া হয়। নির্মাণের পর থেকে ৩১ বছর ধরে ইজারার মাধ্যমে টোল আদায় করে থাকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গত ৩০ জুন ইজারাদারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ নতুন ইজারাদার দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু যথাসময়ে কোনো দরপত্র দাখিল না করায় ১ জুলাই সড়ক ও জনপথ বিভাগ নিজেরাই টোল আদায় শুরু করে। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গড়াই সেতু টোলঘর থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে মাগুরা ভায়া রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি সড়কের প্রবেশদ্বার মধুখালীর গড়িয়াদহে কিছু লোক সেতু পার হয়ে ওই পথ দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের টোল সংগ্রহ করছে। টোল দিচ্ছে মাইক্রোবাস ৭৫, প্রাইভেট কার ৪০, নসিমন-করিমন ৩০ ও মোটরসাইকেল ১০ টাকা।

গড়িয়াদহ থেকে যারা টোল তুলছেন তারা বলছেন, ইজারাদার থাকতে তারাই টোল সংগ্রহ করতেন। যে টাকা এখন তারা প্রতিদিন তুলছেন তা স্থানীয়দের কয়েকজন ভাগ করে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনুমোদন ছাড়াই কেন টোল নিচ্ছেন? জবাবে আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলেই টাকা তুলছেন। আড়পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. বদরুজ্জামান বাবু বলেন, ‘মানবিক সমস্যা বিবেচনা করে ওদের টোল নিতে বলা হয়েছে। সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলেই এটা করা হচ্ছে। গরিব মানুষ, ওদের রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই টোলের টাকা নিয়ে সংসার চালাচ্ছে।’ ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘তবে এটা আইনসংগত নয়।’ গড়াই সেতুর মূল টোল আদায় ঘরে দায়িত্বে থাকা ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শরিফ হোসেন বলেন, ‘সেতুর টোল এখানে একমাত্র আমরাই নিতে পারব। অন্য কেউ নয়। প্রভাশালীরা গড়িয়াদহ মোড় থেকে টোল নিচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানও এতে জড়িত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্যাটি জানানো হয়েছে। অবৈধ টোল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহাতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানান, তিনি ছুটিতে রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights