তরুণদের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ধ্বংসের শিক্ষা দিচ্ছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা তরুণদের দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ধ্বংসের শিক্ষা দিচ্ছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের শিক্ষা দিচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘বুধবার চট্টগ্রামের জামালখান এলাকার রাস্তায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামে অমর ভূমিকা রাখা মাস্টারদা সূর্যসেন, মাওলানা মনিরুজ্জামান থেকে শুরু করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এবং স্বযত্নে রক্ষিত ম্যুরালগুলো বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে যাওয়ার পথে তারা ভাঙচুর করেছে। এর অর্থ বিএনপি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি কোনটাই মানে না এবং ধ্বংস করতে চায়। আমার প্রশ্ন তারা তরুণদের কি শিক্ষা দিচ্ছে? এই ভাঙচুর, অগ্নিসন্ত্রাসের শিক্ষা দিচ্ছে!’

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের কোথাও রাস্তার পাশে এতো সুন্দরভাবে ইতিহাস, ঐতিহ্যের প্রদর্শনী নেই, যেটি চট্টগ্রামের জামালখান এলাকায় করা হয়েছে। প্রায় শতাধিক বিভিন্ন চিত্রকর্ম সেখানে স্থান পেয়েছে। এই দৃষ্টিনন্দন দেয়ালে আমাদের পুরো ইতিহাস তুলে আনা হয়েছে এবং সেগুলো তারা ভাংচুর করেছে। এ অপরাধের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে এবং এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’

বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব যখন বক্তৃতা করে তখন মনে হয় ভেতরে ভেতরে উনি ‘এফআরসিএস’ পাস করেছেন, উনি এখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও বটে। কারণ বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, আর মির্জা ফখরুল সাহেব গলা ফাটিয়ে বলেন উনি জীবন-মরণ সন্ধিক্ষণে। এখন ডাক্তারদের কথা ঠিক না ফখরুল সাহেবের কথা ঠিক, এটাই হচ্ছে প্রশ্ন।’

‘বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য একজন মানুষের স্বাস্থ্যকে রাজনীতিকরণ করার উদাহরণ’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা বেগম জিয়াকে রাজনীতির পণ্য বানিয়েছে। এটা তার জন্য প্রচণ্ড অবমাননাকর। বেগম জিয়ার প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা এবং সম্মান রেখে আমি তাদের অনুরোধ জানাবো, দয়া করে বেগম জিয়াকে বা বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যকে রাজনৈতিক পণ্য বানাবেন না।’

সাংবাদিকরা এ সময় প্রশ্ন করেন- ছয় জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশে নির্বাচন বিষয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেওয়ার খবর, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রায় দুইশত বাংলাদেশির প্রতিবাদ লিপি দেওয়া এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কংগ্রেসম্যানদের চিঠি না পাওয়ার খবর বেরিয়েছে, এ বিষয়ে আপনার মত কি? এর জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তো ইতিপূর্বে কংগ্রেসম্যানদের নামে ভুয়া চিঠিও প্রকাশ করেছিল। যেখানে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে তারা চিঠি পায়নি, সেখানে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির যথার্থতা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে কংগ্রেসম্যানরা এ রকম চিঠি দিতেই পারে। শতশত কংগ্রেসম্যানের মধ্যে ৬ জন কংগ্রেসম্যান চিঠি দিয়েছে -এগুলো বাংলাদেশেই খবর হয়, অন্য কোনো দেশে খবর হয় না।’

এর আগে বিএসপি সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু এবং বিএসপির সাধারণ সম্পাদক জি এম কিবরিয়া তাদের বক্তৃতায় সংবাদপত্র পরিষদের পক্ষে নিউজপ্রিন্টের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা, বিগত অর্থ বছরগুলোর ক্রোড়পত্রের বকেয়া বিল পরিশোধ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে বিএসপি সদস্য অন্তর্ভুক্তি, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান ব্যবস্থা কেন্দ্রীকরণসহ কয়েক দফা দাবি তুলে ধরেন।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আর আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত কয়েক কোটি টাকা আমরা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি, যাতে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে পারে। আর দেশে যখন এক-দেড়শ’ পত্রিকা ছিলো তখন বিজ্ঞাপন কেন্দ্রীয়ভাবে ছিল। এখন সাড়ে ১২শ’ পত্রিকা আর বিজ্ঞাপন এতো বেশি যে বাস্তবতার নিরিখে এগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights