দাম বাড়বে

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল সংসদে বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। আয় বাড়াতে সরকার যেসব পণ্যের শুল্ক ও কর বাড়ায় সাধারণভাবে সেসব পণ্যের দাম বাড়ে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে কিছু পণ্যের শুল্ক ও কর বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

দেশে তৈরি ফ্রিজ-এসি : দেশে তৈরি ফ্রিজ ও এসি উৎপাদনে ব্যবহৃত বিদেশি কম্প্রেসর ও অন্যান্য উপকরণের মূল্যসংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) ও শুল্ক আড়াই শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ফ্রিজ ও এসির মূল্য বাড়বে।

সিগারেট : সিগারেটের সম্পূরক শুল্কের হার ৬৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৬ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া সিগারেট বা বিড়ির কাগজের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূল্যসংযোজন করের (মূসক) হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন। মোটরসাইকেল : ২৫০ সিসির বেশি ইঞ্জিন ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ এবং মোটরসাইকেল-সংশ্লিষ্ট আরও কিছু পণ্যের বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ১০ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব মোটরসাইকেলের দাম বাড়তে পারে। বিদেশি পানির ফিল্টার : বিদেশি পানির ফিল্টার আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। ফলে আমদানি করা পানির ফিল্টারের দাম বাড়বে।
বৈদ্যুতিক বাল্ব : বাজেটে এলইডি ও এনার্জি সেভিং বাল্ব উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এনার্জি সেভিং বাল্ব টিউবলাইটের ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ শতাংশ। এতে বাল্বের দাম বাড়তে পারে।

বিদেশি মাছ : বিদেশ থেকে আমদানি করা সামুদ্রিক মাছ ম্যাকারেল আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। ফলে মাছটির দাম বাড়বে। যদিও আগে থেকেই একই হারে ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর দিতে হয় সার্ডিন মাছ আমদানিতে। কোমল পানীয় : কার্বোনেটেড বেভারেজ কোম্পানির লেনদেন কর শূন্য দশমিক ৬ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া কোমল পানির সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। শুল্ক বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য পানীরও। আমসত্ত্ব, ফলের রস, আইসক্রিম : দেশে আমসত্ত্ব ও ফলের রস উৎপাদনের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। আইসক্রিমে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়বে।

মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ই-সিমকার্ড : বাজেটে মোবাইল সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে মোট কর দাঁড়াবে ৩৯ শতাংশের বেশি। ফলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়বে। এ ছাড়া ই-সিমকার্ড তোলার সম্পূরক শুল্ক ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করা হয়েছে।

চিকিৎসা ব্যয় : বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসাযন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানিতে শুল্ক ৯ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। ফলে চিকিৎসাসেবায় ব্যয় বাড়তে পারে।

বিনোদন সেবা : বিনোদনকেন্দ্র, তথা অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে ভ্যাট ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে বাড়তে পারে ঘোরাঘুরি ও বিনোদনের খরচ।

মবিল : দেশে সিনথেটিক লুব্রিকেটিং অয়েলের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে ন্যূনতম দাম প্রতি টন ৫ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে মবিলের দাম বাড়বে। ইট : ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত ইটে বিভিন্ন হারে কর বাড়ানো হয়েছে। ফলে দাম বাড়বে নির্মাণের অন্যতম এ উপকরণটির।

অন্যান্য : দেশি পণ্য ব্যবহারে উৎসাহী করতে বিদেশি সুইচ, সকেট, হোল্ডারে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights