দেখা যাক আগে কী হয়

প্রতি মুহূর্তে ভাবি ভালো হবে, ভালো হবে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে, আমার বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বস্তি পাবেন। কিন্তু কেন যেন তা কিছুই হচ্ছে না। এই সেদিন একটি নির্বাচন হয়ে গেল। একে নির্বাচন বলা চলে না। এটা কোনো ইলেকশন নয়, সিলেকশন বলাই ভালো। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একেবারেই নির্বাচন ছিল না। সবকিছুই ছিল অনিয়মে ভরা। ভেবেছিলাম তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার হয়তো একটা অবাধ-নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। কেন যেন এবারও তা হলো না। এবারের নির্বাচন আরও খারাপ হলো। পরে কী হবে তা আল্লাহই জানেন। বড় দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা আর ভীষণ সংকোচে আছি। বহু দিন পর নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সে প্রায় ১৫ বছরের কম হবে না। একসময় সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা (প্রা.) লি. নির্মাণ সংস্থার নামে তিন-চার কোটি টাকা অগ্রণী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলাম। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ফখরুদ্দীন, মইন ইউ আহমেদরা সবকিছু যখন বন্ধ করে দিয়েছিলেন তখন তাদের কিংস পার্টিতে যোগ না দেওয়ায় আমাদের ভাতে মারতে, পানিতে মারতে চেয়েছিল। সোনার বাংলার সব কাজ বন্ধ করে দিয়ে কয়েক কোটি টাকা জরিমানা করেছিল। তাদের সময়ই আরবিট্রেশনে তারা হেরে গেলে সব জরিমানা নাকচ হয়ে যায়। সেই যে ঘরে বসেছি, পুরোপুরি নিষ্ঠা নিয়ে রাজনীতি করব তো দূরের কথা সংসার চালানোই দায়। এখনো আমার কাছে ব্যাংকের লিখিত কাগজপত্র আছে। মূল পাওনা ৩, ১৯,০০,০০০ টাকা, সেখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে আমরা প্রায় ১৩-১৪ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। তাতে ঋণ সমন্বয় হয়নি। অনেক চেষ্টা-তদবির করে এর-ওর কাছ থেকে ধারদেনা নিয়ে পুনঃতফসিল করে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয়নি ফল বিপরীতমুখী হবে। কারণ যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল তার খুব সুনাম ছিল না। তার বাবাও ’৯৯ সালে ভোট ডাকাতি করে খুবই বদনাম কুড়িয়ে ছিল। নির্বাচনের প্রথম দিকে সরকারি প্রশাসনকেও খুব সদয় দেখা গিয়েছিল। দু-একবার তারা আমার সঙ্গে কথাও বলেছেন। কত পরামর্শ, কত বুদ্ধি। কিছুটা বিরক্ত হয়ে একসময় বলেছিলাম, এখন ওপরের হুকুমে আমাকে যা বলছেন, যেভাবে বলছেন ওই একইভাবে যদি অন্য পক্ষে বলেন, তখন আমার কী করা উচিত হবে? অনেকেই লজ্জা পেয়েছিলেন, অনেকে আবার পাননি। কারণ জীবন চালাতে সবার আমার মতো হলে চলে না। অনেক কিছুর সঙ্গে খাপখাইয়ে নিতে হয়। ওসব নিয়ে খুব একটা ভাবি না। মান-সম্মান, ক্ষমতা সবই আল্লাহর হাতে। আল্লাহ যখন যাকে যেভাবে দেন তিনি তখন তা সেভাবে ভোগ বা ব্যবহার করেন। কিন্তু ধীরে ধীরে এই অবক্ষয়ের জমানায় আমি মারাত্মক দুশ্চিন্তায় পড়ে আছি। কোনো নীতি-নৈতিকতা নেই, সত্য-মিথ্যার কোনো পার্থক্য নেই। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ Morale, কারও কোনো Morale নেই। কেমন যেন আমরা জন্তু-জানোয়ারের চাইতেও অধম হতে চলেছি। জন্তু-জানোয়ারেরও খারাপ-ভালো বোঝা যায়। চারিতে গরুর খাবার না থাকলে হাম্বা হাম্বা করে। গরু-ঘোড়া-ছাগল-ভেড়াকে আদর করলে গা এলিয়ে দেয়। আমার বাড়িতে মা কুশিমণির বিড়াল হাত বাড়ালে কোলে উঠে বসে। কিন্তু সমাজের মানুষজন কেমন যেন অনুভূতিহীন হয়ে পড়েছে। কারও কোনো আকার-বিকার নেই। সবাই কেন যেন ভাটার টানে ভেসে চলেছে। কোথায় তাদের ঠিকানা মনে হয় কেউ জানে না।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ভাবনাটা আমার বড় বেশি বেড়েছে। আমার সারাজীবনের ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-চেতনা এমন হোঁচট খেয়েছে যা আগে কখনো ভাবনাতেও আসেনি। জাতির সম্পদ জাতির শ্রেষ্ঠ কারিগর শিক্ষক সমাজ। আজকের শিশু কাল জাতির ভবিষ্যৎ। শিক্ষককুল জাতিকে গঠন করে, জাতিকে লালন-পালন করে। একটি শিশু যদি সাহসী হয়, চরিত্রবান হয়, জ্ঞানী হয় তাহলে একটা জাতিকে নাড়া দিতে পারে। কিন্তু কীভাবে দেবে? আগে ছিল শিক্ষকরা আমাদের মাথা, সমস্ত জাতির অস্তিত্ব। এখন তারা কোথায়? জাতি যেমন জানে না, তারা নিজেরাও জানে না। প্রতিটি নির্বাচনে শতকরা ৯০ ভাগ ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকরা। তার মধ্যে প্রাইমারির শিক্ষকই বেশি। তারা যদি এভাবে পচে যায় তাহলে দেশ আর জাতির কী হবে? এবার নির্বাচনে শতকরা ১০ জন প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ভালো ছিলেন বলা যাবে না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব জায়গায় দু-এক ঘণ্টা স্বাভাবিক ভোট হয়েছিল, এবার তাও হয়নি। উপরন্তু সেবার বিরোধী দল থাকলেও এবার তেমন কোনো বিরোধী দল ছিল না। অন্যরা তো মহাজোটের শরিক। হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন ও অন্যদের শেষ মুহূর্তে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করে তাদের সিট দেওয়া হয়েছিল। তাও তারা অনেকে জিততে পারেননি। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি বেশ বড়সড় দল। শেষ পর্যন্ত তারাও বিরোধী দল হিসেবে নির্বাচন করেনি বা করতে পারেনি। তাদের ২৬ জনকে নৌকার মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাহার করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ১১ জন পাস করেছে, ২৬ জন নয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে একমাত্র রাজনৈতিক দল ছিল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের গামছা। বেশ কয়েকটি গামছা নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা ছিল। বিশেষ করে উজিরপুর-বানারীপাড়া, বরিশাল-২ এর প্রার্থী নকুল কুমার বিশ্বাস। নৌকার মনোনীত প্রার্থী তালুকদার মো. ইউনুসকে প্রত্যাহার করে রাশেদ খান মেননকে ছেড়ে দেওয়ায় এলাকার সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছিল। আওয়ামী ঘরানা এবং অন্য প্রায় সবাই গামছার পতাকা তলে শরিক হয়েছিল। নকুল কুমার যেখানে গেছে সেখানেই হাজারো মা-বোনের সমন্বয় ঘটেছে। অনেকে নিজে থেকে এগিয়ে এসে বলেছে আমরা তোমাকে ভোট দেব। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজুর অনেক কর্মীকে মারধর করা হয়েছে, গাড়ি-ঘোড়া পোড়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে তেমন কোনো লোক অংশগ্রহণ করেনি, ভোট কেন্দ্রে যায়নি। ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। সব ভোট রাশেদ খান মেননের। আমি হেরেছি বা হারিয়ে দেওয়া হয়েছে সেটার চাইতেও বড় ভাবনা ভোট কেন্দ্রে আমরাও লোক নিতে পারিনি। টাঙ্গাইলের কোথাও ২০-২৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। টাঙ্গাইল-৮ এ বড়জোর ৩০ শতাংশ ভোট হতে পারে। বাকি ভোট কোথা থেকে এলো? অন্য সময় শুনতাম জাল সিল মারে, ব্যালট পেপার বাক্সে ভরে দেয় অথবা বাক্সে ভরা থাকে। কিন্তু এবার তাও হয়নি। ৩০-৩৫ হাজার প্যাকেট করা জাল ভোট শুধু হিসাবে ধরা হয়েছে। তা না হলে ভোট বন্ধ করার সময়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের স্বাক্ষর করা ভোটের সংখ্যার সঙ্গে গণনা শেষে ঘোষণার মিল নেই কেন? আমার হাতেই প্রিসাইডিং অফিসারদের ১৮টা কাগজ আছে। যেখানে ভোট বন্ধ হওয়ার সময়ের ভোট কাস্টের সংখ্যা ৩০০ থেকে ৯০০ পর্যন্ত ফলাফলে বেশি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব ভোট কোথা থেকে এলো, কেন এলো, কীভাবে এলো? এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। গ্রহণযোগ্য কিছু ব্যাখ্যা অবশ্যই থাকা উচিত। সমাজ এবং রাষ্ট্র কখনো একেবারে এমন নীতি-নৈতিকতা, সত্য-মিথ্যার কবর রচনা করতে পারে না। করলে তার পরিণাম কখনো ভালো হয় না, শেষ পর্যন্ত হবেও না। হ্যাঁ, এটা স্বীকার করতে এখন আর কোনো দ্বিধা নেই। দেশের কথা চিন্তা করলে, মানুষের কথা চিন্তা করলে, নেত্রীর কথা চিন্তা করলে সব সময় সবকিছু করতে পারিনা, করা মঙ্গলজনকও না। আমাদের ধ্বংস করে সেই ধ্বংসের ওপর দেশ যদি মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, দেশের কল্যাণ হয়, তাহলে সে ধ্বংসযজ্ঞেও অন্তত আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সত্যিই কি তা হওয়ার আদৌ কোনো সম্ভাবনা আছে? তা তো দেখছি না। এখন না হয় সত্যিই আমাদের বয়স হয়ে গেছে। অচলের খাতায় ফেলা যেতেই পারে। ১৯৭৩-এ কিন্তু এমন অচল ছিলাম না। তখন সারা দেশে অনেক ভালোবাসা ছিল, অনেক মানুষ তাকিয়ে থাকত। এখনো ভালোবাসা নেই তা নয়, তাকিয়ে থাকে না তাও নয়। কিন্তু তখনকার মানুষ ছিল হীরার টুকরা। ভারত থেকে চুরি করে নেওয়া ব্রিটেনের রানির মুকুটের কোহিনুর। এখনকার মানুষের কিছুটা দুর্বলতা আছে, কিছুটা সাহসের ঘাটতি আছে, আগের মতো প্রতিবাদমুখর নয়। ঠকতে ঠকতে সাধারণ জনগণ তাদের বিশ্বাস অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। তাই ঝাঁপিয়ে পড়ে না। ঝাঁপিয়ে না পড়া মানুষ খুব একটা ভালো না। যারা ঝাঁপিয়ে পড়ে না তারাই কখন বারুদের মতো জ¦লে উঠে বলা যায় না। সমাজ সংসারকে সঠিক পথে চালাতে হলে সততা, ন্যায়পরায়ণতার কোনো বিকল্প নেই। শত্রুর ন্যায় সত্যকে স্বীকার করার বুকের পাটা থাকতে হবে। তা না হলে ওপরের চাকচিক্য যাই দেখা হোক, ভিতর থেকে আমরা একেবারে ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ব। সময় আসবে যখন তখন আর তেমন কিছুই করার থাকবে না।

ভোটে না দাঁড়ালে, অমন ভোট না দেখলে যা নির্দ্বিধায় নিঃসংকোচে বলতে লিখতে পারতাম সামান্য হলেও এই রকম দুর্নীতিপরায়ণ ভোটে অংশ নিয়ে পরাজয়ের গ্লানি কপালে লিখতে অবশ্যই বাধোবাধো লাগে। সেই জড়তা কাটিয়ে উঠতে আরও অনেক সময় লাগবে। ততদিনে কোথাকার পানি কোথায় গড়ায় সেটাই দেখার বিষয়। স্বাধীনতার পরপর ’৭৩ সালে এক নির্বাচন হয়েছিল। তখন আমরা এমন ছিলাম না। তখন আমরা হাত-পা ছুড়তে পারতাম। সেই ছোড়াছুড়িতে কাজও হতো। কারণ জাতির পিতা এমন একজন নেতা ছিলেন তিনি কথা শুনতেন, তাঁকে কথা বলা যেত, তিনিও বলতেন আমরা শুনতাম, শোনাতে পারতেন। সেই ’৭৩-এ নির্বাচনের পরপরই আগের গণভবন সুগন্ধায় নেতাকে বলেছিলাম, ২৮৮-৯০ সিট আওয়ামী লীগ না পেলে কি হতো না? আতোয়ার রহমান খান, ড. আলীম আল রাজী, সালাম খান, আবদুর রশিদ ইঞ্জিনিয়ার এরা কয়েকজন সংসদে এলে এমন কী হতো? কেন হেলিকপ্টার পাঠিয়ে খন্দকার মোশতাকের জন্য দাউদকান্দি থেকে ইঞ্জিনিয়ার রশিদের ব্যালট বাক্স তুলে আনা হলো? বঙ্গবন্ধু আমার কাছে ছিলেন সততার এক প্রতীক। তিনি আমাকে হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসতেন। আমার সঙ্গে কোনো তেড়ামেড়া যুক্তিতর্কের কথা বলতেন না। বলতেন সন্তানের কাছে পিতার মতো সহজ-সরলভাবে। এক পর্যায়ে বলেছিলেন, ‘কাদের, আমি তোর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি না। কিন্তু অনেককেই সামাল দেওয়া মুশকিল। তারা অনেকেই দেশটাকে বাপের সম্পত্তি ভেবে বসে আছে। আমি দেখছি কী করে এসব সামাল দেওয়া যায়? আপ্রাণ চেষ্টাও তিনি করেছেন। কিন্তু আর সামাল দিয়ে উঠতে পারেননি। প্রতি মুহূর্তে দেশ ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ায় একটার পর একটার পেছনে লেগে থাকতে হয়েছে। ভালোভাবে শ্বাস নেবেন সে সুযোগ অনেক ক্ষেত্রে আসেনি। এখন ষড়যন্ত্র নেই তা বলছি না। এখন যেমন আমার দেশ নিয়ে বিরাট ষড়যন্ত্র আছে, তখন এর চেয়ে বেশি ছিল। আমরা কেবল স্বাধীন হয়েছি। কারও বাড়াভাতে ছাই না দিলেও পৃথিবীর প্রায় সব শক্তি ছিল আমাদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে আমেরিকা, চীন, ইউরোপ, আরব দেশ। আমরা তো শুধু রক্তের জোরে স্বাধীনতা এনেছিলাম, জীবন দিয়ে স্বাধীনতা এনেছিলাম। এখনো মনে হয় পাকিস্তান যদি তাদের চরিত্র ঠিক রাখতে পারত, ন্যায়-নীতি রাখতে পারত, মা-বোনের সম্মান-সম্ভ্রম নষ্ট না করত, আল্লাহ যদি নারাজ না হতেন, তাঁর গজব যদি পাকিস্তানিদের ওপর না পড়ত আমার তো মনে হয় আমরা কোনোমতেই স্বাধীন হতে পারতাম না। আমাদের যুদ্ধ বদর-উহুদ-খন্দকের যুদ্ধের চাইতে খুব একটা ব্যতিক্রম ছিল না। আমাদের ছিল ইমান, ওরা ছিল বেইমান। আল্লাহর গজবে ওরা পরাজিত হয়েছে, শুধু আমাদের অস্ত্রের আঘাতে নয়।
যখন লেখাটা লিখছি তখন গণভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করছেন। এবার তো সংসদে প্রাণ খুলে একজনও কথা বলতে পারবেন না। সবাই তাকিয়ে থাকবেন বোনের মুখের দিকে। মুখ চাওয়া চাওয়ি করে যত কিছুই হোক ভালোভাবে একটা রাষ্ট্র চলে না, চলতে পারে না। ৬৩ জনের একজন বাদে আর সবাই নৌকা মার্কা। ৬৩ জনেরও এমন কেউ নেই যে তারা নৌকা এবং বঙ্গবন্ধুর অনুসারী নন। ৬০ জন তো মনোনয়ন পাননি বলে স্বতন্ত্র দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর একজন আমার বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী। তিনি তো আজীবনের বঙ্গবন্ধুর কর্মী। সংসদ চালাতে রাষ্ট্র চালাতে তাই কিছুই কি অসুবিধা হবে না? সামনের ঘোর অন্ধকার অতিক্রম করে আলো ফোটাতে হবে। কীভাবে এ আঁধার কেটে আলোর দিকে এগিয়ে যাব? আমি তো তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। অন্য কেউ দেখলে নিশ্চয়ই তার সাথি হওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু তেমন কেউ আছেন কি যিনি আমাদের এই অন্ধকারে আলোর দিশা দিতে পারেন?

সামনে রমজান। কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাক নেই। বন্যা, বৃষ্টি, ঝড়, তুফান কোনো কিছুর আলামত নেই। তাও বাজার চড়া। সব ইচ্ছা স্বাধীন। রমজানে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়বে। সেটা কীভাবে সামাল দেওয়া হবে বুঝে উঠতে পারছি না। মাননীয় নেত্রী বোন হাসিনা স্বতন্ত্র এমপিদের কী আশ্বাস প্রশ্বাস দেবেন! এটা ঠিক, সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদে দুজন মাত্র নেতা। একজন সংসদ নেতা, আরেকজন বিরোধীদলীয় নেতা। সংসদ নেতা বিরোধী দলসহ পুরো সংসদের তিনি নেতা। তর্ক-বিতর্ক যাই হোক সমগ্র সংসদের প্রতি সংসদ নেতার দায় দায়িত্ব আছে। সব সংসদ সদস্যের মানসম্মান নিরাপত্তা সংসদ নেতার ওপর বর্তায়। তাই দেখা যাক, তিনি স্বতন্ত্র সদস্যদের কী বলেন? কী করেন?

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights