নাইকো মামলা : বিদেশিসহ দুই সাক্ষীর পুনরায় জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন

অনলাইন ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেন পুলিশের সদস্য লয়েড শোয়েপ ও মামলার বাদী দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলমকে পুনরায় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি গ্রহণের (রিকল) আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ আবেদন করেন তিনি।

এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এদিকে মঙ্গলবার কানাডিয়ান মাউন্টেন পুলিশের সদস্য কেবিন দুগ্গানকে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। গতকাল সোমবার সাক্ষ্য দেন কানাডিয়ান মাউন্টেন পুলিশের অপর সদস্য লয়েড শোয়েপ। সেদিন তিনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দেননি।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য জিয়া উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি সাক্ষীকে রিকল করতে হলে সুনির্দিষ্টভাবে প্রশ্নসহ দরখাস্ত দিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আইনের সেই বিধানের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো হয়নি৷ তারা শুধু রিকলের দরখাস্ত দিয়েছেন, প্রশ্ন উল্লেখ করেননি। আমরা আপত্তি দিয়েছি। এ বিষয়ে ২ নভেম্বর শুনানি হবে।

এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর মামলার বাদী মাহবুবুল আলম তার জবানবন্দি শেষ করেন। ১৭ অক্টোবর তাকে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

গত ১৯ মার্চ এই মামলায় চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

এরপর মামলার চার্জ গঠনের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। গত ৩০ আগস্ট বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর থেকে মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

অপর আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী,বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। এদের মধ্য প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন।

অপরদিকে আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকে পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights