নাইজারে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলা, নিহত ৪৪
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি মসজিদে স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ৪৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। শুক্রবারের এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ১৩ জন। শনিবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুরকিনা ফাসো ও মালি সীমান্তঘেঁষা নাইজারের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোকোরো শহরের ফোমিতা গ্রামের মসজিদে শুক্রবার নামাজের সময় হামলার ঘটনা ঘটে। পশ্চিম আফ্রিকার সশস্ত্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠী ইআইজিএস (ইসলামিক স্টেট ইন গ্রেটার সাহারা) এই হামলা চালিয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
নাইজারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারী ইআইজিএস গোষ্ঠী এই হামলার জন্য দায়ী। তবে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ভারী অস্ত্রে সজ্জিত জঙ্গিরা মসজিদ ঘিরে ফেলে এবং পবিত্র রমজান মাসে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর ‘বিরল নিষ্ঠুর গণহত্যা’ চালায়।”
পরে সেখান থেকে চলে যাওয়ার সময় জঙ্গিরা স্থানীয় একটি বাজার ও কয়েকটি বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানায় মন্ত্রণালয়। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা সৈন্যরা হামলায় ৪৪ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু এবং ১৩ জন গুরুতর আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এই হামলার ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
২০১২ সালে মালির ইসলামপন্থী তুয়ারেগ বিদ্রোহীরা দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় একটি ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর জেরে একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী মালিতে ব্যাপক সহিংসতা শুরু করে। পরে বুরকিনা ফাসো, নাইজারসহ সাহেল অঞ্চলে এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
জঙ্গিদের দমনে স্থানীয় সৈন্যদের সহায়তায় পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ ওই অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করেছে। বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াইরত সৈন্যদের সহায়তায় পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যতম প্রধান মিত্র নাইজার।
নাইজারের জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো প্রায়ই বিভিন্ন গ্রাম, সামরিক ও পুলিশি তল্লাশি চৌকি এবং সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এই হামলাগুলোর ফলে দেশটিতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সোর্স: রয়টার্স