প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য ‘ডিবির হাওর’

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

অদূরে সীমান্তের সবুজ পাহাড়। পাদদেশে লাল শাপলার গালিচা। উপরে নীল আকাশ আর নিচে লাল-সবুজের মিশ্রণে ফোটে আছে এক সৈর্গিক সৌন্দর্য্য। লাল গালিচার বুক চিরে, সরু পথ ধরে এঁকে-বেঁকে চলে বাহারি নাও (নৌকা)। দু’পাশে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির উন্মুক্ত বিচরণ। আছে বালিহাঁস, শামুকখোল, পানকৌড়ি, জল ময়ুরী, পাতিসরালি, সাদাবকসহ নানা জাতের পাথি। পাখিদের কিচির-মিচির ফুলের রাজ্যকে করে তোলে আরও মোহনীয়। এ যেন প্রকৃতির এক টুকরো স্বর্গ রাজ্য।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ‘ডিবির হাওর’ ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এখন ‘শাপলার রাজ্য’ হিসেবে পরিচিত। এ বিলে ফুটে থাকে অজস্র অপরূপ লাল শাপলা। মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে এ বিলের অবস্থান। পাশাপাশি চারটি হাওর (ডিবিরি হাওর, ইয়াম, হরফকাটা ও কেন্দ্রী বিল) মিলেই এর নাম দেয়া হয় ডিবির হাওর। হাওরের পরেই পাহাড়ের সারি। রোজ বিহানে পাহাড়ের কোলে, প্রকৃতিগত ভাবেই ফুটে অগুণতি অপূর্ব লাল শাপলা। ফুলে ফুলে লাল হয়ে যায় পুরো এলাকা। এর মনভোলানো অনিন্দ রূপ দেখতে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসুরা। দলবেধে সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন নৌকায় ভেসে ভেসে।

ফুলের সাথে হাওরে অন্য রকম আবহ তৈরী করে অতিথি পাখির কলতান। সারিবব্ধ পাখিদের ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা, কখনও উন্মুক্ত উড়াল দোলা দেয় পর্যটকদের মনে। সৌন্দর্যের পাশাপাশি এ হাওরের রয়েছে ইতিহাসও। এখানে আছে স্বাধীন জৈন্তারাজ্যের রাজা বিজয় সিংসের সামাধি। হাওরের শেষ প্রান্তে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দু’শ বছরের পুরনো মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ।
লতা-পাতা-গুল্মে ভরা এ হাওর মনে হয় শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি। যেখানে পাহাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় দুইশ বছরের পুরনো মন্দির। প্রকৃতির এই অপার সৌর্ন্দয্যে বারে বারে হারায় মন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights