প্রতিশোধ নিতে মরিয়া ইরান, পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি ইসরায়েলেরও

অনলাইন ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইরানের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির সরকার। মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছে তেহরান। অন্যদিকে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়েছে, হামলা হলে বসে থাকবে না তারা। আর এক্ষেত্রে ইসরায়েলকে বরাবরের মতো সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস, ইসলামিক জিহাদ, ইয়েমেনের সশস্ত্র হুতি বিদ্রোহী, লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও ইরাকের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে শিগগিরই আলোচনায় বসার কথা ইরানের প্রতিনিধিদের। তেহরানের এ বৈঠকে ইসরায়েলে হামলা চালানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় খোঁজা হবে। আলোচনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামিনি ও প্রভাবশালী রেভল্যুশনারি গার্ডস বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্তকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন ইরানের আরেকজন কর্মকর্তা। ইরানের সেনাপ্রধান জেনারেল মোহাম্মাদ বাকেরি বলেছেন, হামলা অবশ্যই চালানো হবে। কোনো সন্দেহ নেই, নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে অনুতাপ করতে হবে।

হামাস ও হিজবুল্লাহ নেতাকে হত্যার পর যেকোনো হামলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ইসরায়েলও। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েল প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের ওপর কোনো আগ্রাসন চালানো হলে, তার হিসাব ভালোমতো চুকিয়ে দেওয়া হবে। কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা চালায়, তার জবাবে পাল্টা হামলা চালানো হবে।
গত বৃহস্পতিবার হিজবুল্লাহ নেতা নাসারাল্লাহর হুমকির পর একই কথা বলেছিলেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। তার কড়া ভাষ্য ছিল, ভারী মূল্য চোকানোর আগে বড় বড় কথা, হুমকি ও মিথ্যা বলা বন্ধ করুন নাসারাল্লাহ। ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে পূর্ণ শক্তি খাটাব আমরা। এদিকে, হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা রক্ষায় আবারও নেতানিয়াহুকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। একইসঙ্গে ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুতিদের সব হুমকির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পাশে থাকার কথা বলেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, তেহরানে গত বুধবার ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে হামাস ও ইরান। তবে এর দায় এখনো স্বীকার করেনি ইসরায়েল।

ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার দায় শিকার না করলেও এক দিন আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের কাছে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকুরকে হত্যা করার কথা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার ফুয়াদের দাফনের সময় দেওয়া ভাষণে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এ হত্যার জবাব দেওয়া হবে। ইসরায়েল জানে না, কোন বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে তারা।

সূত্র- রয়টার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights