বগুড়ায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির দফায় দফায় সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতালে বগুড়ায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।

রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের গালাপট্টি সড়কসহ সদরের বিভিন্ন স্থানে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপি পুলিশ এবং আওয়ামী লীগকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রায় ৭টি টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এতে পরিস্থিতি শান্ত হলে সাতমাথাসহ পুরো শহরজুড়ে রিকশা-ভ্যান সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্বাভাবিকভালে চলাচল শুরু করে। তবে সরকারি অফিস-আদালত খোলা থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে আসতে নানা বাধার সম্মুখিন হতে হয়। এদিকে হরতালকে কেন্ত্র করে শহরের প্রায় সকল মার্কেটের দোকান ও শপিংমল বন্ধ ছিল।

সংঘর্ষে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজী জুয়েল আহত হয়েছেন। এছাড়াও জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইদুল ইসলাম আহত হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিন বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগ শহরের সাতমাথায় শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। একই সময় হরতালের সমর্থনে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা শহরের নবাববাড়ী সড়কে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মিছিল নিয়ে গালাপট্টি সড়কে আসলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলের ডাকা হরতালে বগুড়ায় জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে ত্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেলসহ সবরকম যানবাহন চলাচল করছে। তবে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে দূর পাল্লার যাত্রীবাহী কোন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সড়কে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়।

এদিকে সদর উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও তার সমর্থকরা পিকেটিং করেছে। এসময় মহাসড়কের দুইপাশে পণ্যবাহী যানবাহনে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। পরে পুলিশ এসে তাদের ধাওয়া দিলে পিকেটাররা পালিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত বগুড়ায় যানবাহন ভাংচুরের কোন খবর পাওয়া যায়নি।

হরতালের সমর্থন জানিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনাসহ একাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।

অপরদিকে হরতালের প্রতিবাদে দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শহরের সাতমাথায় অবস্থান নেয়। পরে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার জানান, জেলাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ চলাকালে প্রায় ৭টি টিয়ারসেল ছুড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। বগুড়ায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেয়া যাবে না। এজন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights