বিলুপ্তির পথে মৌটুসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

সারাক্ষণ চঞ্চলতায় মুখর থাকা মৌটুসি পাখি আর আগের মত দেখা যায় না। খাদ্যাভাস পরিবর্তন, আবাসস্থল কমে যাওয়াসহ নানা কারণে মৌটুসির অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।

মৌটুসি সম্পর্কে জানা গেছে, সব সময় আনন্দে মেতে থাকে এই পাখি। কণ্ঠে রয়েছে সুরেলা আওয়াজ। জোড়া মিল করে চলে এই পাখিটি। প্রায় সর্বক্ষণই ডানা ঝাপটিয়ে চলে। মৌটুসি নিচের দিকে বাঁকানো ঠোঁট ও নলাকৃতির জিহবা বিশিষ্ট পাখি। ১১৬ প্রজাতির মৌটুটি রয়েছে। এরা বেশ রং চঙা, চঞ্চল পাখি, অধিকাংশের আবাস আফ্রিকায়। তবে বাংলাদেশে ১১ প্রজাতির মৌটুসি রয়েছে। এদের ৪টি পরিযায়ী। এরা বনাঞ্চলে, ঝোপঝাড়ে ও বাগানে থাকতে পছন্দ করে। অনেক প্রজাতির পুরুষ পাখির রং খুবই উজ্জ্বল। হলুদ, লাল ও কালো রঙের আভাযুক্ত বর্ণাঢ্য নীল রক্তাভ ও সবুজ রঙের হয়ে থাকে। তবে অনেক স্ত্রী পাখির গায়ের রং মলিন। চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় এদের এক স্থানে স্থির হয়ে থাকতে দেখা যায় না। এদের খাদ্য তালিকায় কীটপতঙ্গ ও ফুলের নির্যাস, তাল-খেজুরের রস ইত্যাদি রয়েছে। এরা গাছের ডালে ঝুলন্ত ডিম্বাকৃতির বাসা বানায়। স্ত্রী পাখি বাসা বানায় ও ডিমে তা দেয়। এরা সাধারণত দুটি করে ডিম দেয়। এদের ডাক গানের মত মনে হয় হওয়ায় অনেকেই মুগ্ধ হয়ে এদের ডাক শোনেন।

সম্প্রতি মৌটুসির ছবি তুলেছেন, রংপুর সৌখিন আলোকচিত্রী কবি ও লেখক রানা মাসুদ। তিনি বলেন, চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় এই পাখির ছবি তোলা একটু কষ্টের ব্যাপার। এই পাখিটি এখন আমাদের দেশে প্রায়ই দেখা গেলেও আগের চেয়ে সংখ্যায় অনেক কমে গেছে।

রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন ও আবাসস্থল সংকটের কারণে এই পাখির অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights