বেডে ৫০০ ফ্লোরে ৭০০ রোগী!

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল। বেড ও জনবল সংকটে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। ৫০০ বেডের স্থলে রোগী থাকছেন ১২০০। তাই ৭০০ রোগীর ফ্লোরেই চলছে চিকিৎসা। এখানে জনবলের ৭০৮টি অনুমোদিত পদ রয়েছে, যা পাঁচশ’ শয্যার জন্য পর্যাপ্ত নয়। তার ওপরে সেখান থেকে শূন্য রয়েছে তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণির অনেক পদ।

রোগী, স্বজন এবং হাসপাতালের সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে এ হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে এটি ৫০০ শয্যায় উন্নীত হয়। তবে জনবল ৫০০ শয্যার দেওয়া হয়নি। এখানে স্বাভাবিক সময়ে কোনো কোনো দিন ১২০০ রোগী ভর্তি হয়। আউটডোরে চিকিৎসা নেন গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০০০ রোগী। তাদের সেবা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখানে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী অঞ্চলের স্বল্প আয়ের রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিটে রোগী, সিটের পাশে ফ্লোরে রোগী। হাসপাতালের হাঁটার পথে রোগী শোয়ানো হয়েছে। কম জায়গায় বেশি রোগী রাখায় ঘিঞ্জি পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। গরমে গুমোট পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। অষ্টম তলায় মেডিসিন বিভাগের ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, পথের মধ্যে পড়ে থাকি। ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। একটি সিট পেলে সুবিধা হতো।
সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, আমরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, হাসপাতাল প্রশাসন আগের থেকে সেবা প্রদানে আন্তরিক। তবে রোগী বেশি হওয়ায় তারা সেবা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালটির সিট বাড়ানো প্রয়োজন। সঙ্গে দালালের উপদ্রব কমাতে হবে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, বৃহত্তর কুমিল্লার উল্লেখযোগ্য হাসপাতাল এটি। হাসপাতালে বেড সংকট রয়েছে। হাসপাতাল ১ হাজার বেডে উন্নীত করা ও সে নিরেখে জনবল দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত আমাদের বেড সংকট কেটে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights