মৃত্যুকে সঙ্গী করে পাহাড়ে বাস

চট্টগ্রাম নগরে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় আছে ২৬টি। এসব পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে প্রায় ৭ হাজার পরিবার। এসব পরিবারে শিশু, বৃদ্ধসহ বসবাসকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। নগরের বাটালি হিল, ডেবার পাড়, বায়েজিদ, আকবর শাহ্ ও খুলশী এলাকার পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে ছোট ছোট ঘর নির্মাণ করে বাস করছেন অনেকেই। এর মধ্যে সিংহভাগই বিভিন্ন জেলা থেকে আসা। দুই থেকে ৪ হাজার টাকা ভাড়ায় এরা থাকেন। স্থানীয় প্রভাবশালীরাই এসব ঘর তৈরি করেন। অনেক পাহাড়ের পাদদেশে বহুতল ভবনও আছে।

বাস্তবায়ন হয়নি ৩৬ সুপারিশ

চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়গুলো রক্ষায় ২০০৭ সালে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি ৩৬টি সুপারিশ প্রণয়ন করে। কিন্তু ১৭ বছর পার হলেও বেশির ভাগ সুপারিশই বাস্তবায়ন হয়নি। জানা যায়, ২০০৭ সালে পাহাড়ধসে চট্টগ্রামে এক দিনেই ১২৭ জন প্রাণ হারান। ওই সময় বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) সদস্যসচিব এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধি নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ৩৬টি সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়।

বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, পাহাড় রক্ষায় ৩৬টি সুপারিশ আছে। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এসব সুপারিশ শতভাগ বাস্তবায়ন করা যায়নি।

১৭ বছরে ২৭ সভা

চট্টগ্রামের পাহাড় রক্ষায় ‘পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি’ নামে ২০০৭ সালে একটি কমিটি হয়। এর পর থেকে ২৭টি সভা হয়। সর্বশেষ সভা হয় গত ২০ জুন। সভায় সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২০১৭ সালে ৩০টি পাহাড়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকা করা হয়েছিল। তালিকায় ৬৬৬টি পরিবারের বসবাস ছিল। অবৈধ বসতি উচ্ছেদের জন্য অবৈধ বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সভাপতি পাহাড়ধসের বিপর্যয়ের আগে টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তই আলোর মুখ দেখে না। ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত সভার প্রতিটির কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights