যখন লড়াই করতে নেমেছি, শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাবো : হিরো আলম

অনলাইন ডেস্ক

জীবনযুদ্ধে (নির্বাচনে) যখন লড়াই করতে নেমেছি। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাবো বলে জানিয়েছেন আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। আজ মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে স্বতন্ত্র থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন হিরো আলম। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিল করলে নির্বাচন কমিশনে আপিল আবেদন করেন তিনি।

হিরো আলম বলেন, কমিশনের প্রতি অনুরোধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে দেখবেন, আমার সব কিছু ঠিক থাকলে প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ইসি থেকে বাতিল হলে হাইকোর্টে যাবো।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলাম বলেন, প্রতিটা মানুষের নির্বাচন করার অধিকার আছে। এবারও করার টার্গেট আছে আমার। কথায় তো আছে, একবার না পারিলে দেখ শতবার। এমন কোন বয়স হয়নি যে, আমি নির্বাচন করতে পারবো না। যেহেতু জীবনযুদ্ধে (নির্বাচনে) লড়াইয়ে নেমেছি, দেখি শেষ পর্যন্ত কতটা করতে পারি। আমি পরিপূর্ণভাবে সব জমা দিয়েছি। এরপর কমিশন সিদ্ধান্ত দিলে বুঝতে পারবো, তারা সুষ্ঠু বিচার করলেন না অবিচার করলেন।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে যখন ভোট করি তখনও একই কারণে বাতিল করা হয়েছিল। এবার সে ভুল জানা মতে করিনি। একটা ভুল তারা ধরেছেন যে, একজন ভোটারের নাকি নাম্বরা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ওই নামে আমি কারো নাম্বারই জমা দিইনি, উনারা যে ভুলটা ধরেছে আরেকটা ভোটার লিস্টে নাম পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু নাম্বার পাওয়া যাচ্ছে না। এই দুইটা বিষয়টি আমি কমিশনে জমা দিয়েছি। আগেরবারও বগুড়া-৪ আসনে প্রার্থী হলে হাইকোর্ট থেকে পরে প্রার্থিতা পেয়েছিলাম। সে বারও এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে এতকিছু করার পরও বাতিল করে দিল। তারপরও আমি হাল ছাড়লাম না। শেষ পর্যন্ত আইনের প্রতি বিশ্বাস ছিল। পরে হাইকোর্ট দিলেন। সেই নির্বাচনে মারামারির কারণে দুপুরে ভোট বর্জন করি।

হিরো আলম বলেন, ওখানে বগুড়া সদর ও কাহালুর দুইটা আসনেই শুধু আমার না, মোট ১১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বেশি ভাগই স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে। সবাই এ ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনে ভুল। আমার নামে কোনো মামলা নেই বলেন, ঋণখেলাপি নেই বলেন, তারপর আইনের অন্য কোনো দোষ কিন্তু ধরতে পারেনি। শুধু বের করছেন ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনে ভুল।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ান থাকলে তো বাইরে থাকতে পারতাম না। বাইরে কেন আমি? এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট, গুজব। আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য কিছু লোক এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

ষড়যন্ত্র যদি নাই হবে তাহলে একটা আসনে তো পেতাম। দুইটা আসন থেকে কেন বাতিল করা হবে। কোনো কারণ থাকতে পারে। কারা ষড়যন্ত্র করছেন এ মুহূর্তে বলবো না। ভোটের মাঠে যাবো তখন সবাই জানতে পারবেন। আমরাও পরবর্তীতে সব তুলে ধরবো।

কোনো জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে দুটো আসনে নমিনেশন পেপার তুলছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন আমি ভাইরাল হইনি তখন দুইবার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করেছিলাম। তারপর এলাকার লোকজনের দাবি যেহেতু পছন্দের প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না, তাই এবারও বগুড়া সদর থেকে নির্বাচন করবো। যেহেতু কাহালুর থেকে আগে ভোট করেছিলাম তাই ফের সেখান থেকে নমিনেশন নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, আমি জয়লাভ করবো। ১৮ সালের নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হয়নি। আমার এলাকায় খুঁজে পায়নি। অন্য কোথাও হয়েছে কিনা আমি জানি না, আপনারা বলতে পারবেন।

কোটি টাকার সম্পদের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু লোক থাকেন তারা তিলকে তাল বানিয়ে ফেলে। আমার জমা দেওয়ার কথা ২০ লাখ, ওরা হয়তো ৫০ লাখ করে দিয়েছে। লিখতে তো আর সমস্যা হয় না, বলতেও সমস্যা হয় না। দেখতে হবে কোটি কোটি টাকা আছে কিনা। এটা তো আমি চাইলেও লুকিয়ে রাখতে পারবো না। আমার কোটি কোটি টাকা, এতো সম্পদ যদি থেকে থাকে তাহলে দুদক অবশ্যই তা খুঁজে দেখবে, আমার এতাে কিছু আছে কিনা।

হিরো আলম বলেন, সম্পদের পরিমাণ বলতে আমার কিছু ধানি জমি আছে। নতুন একটা বাসা করছি। আর একটা গাড়ি আছে। সম্পদের পরিমাণ কত হবে। গ্রামগঞ্জে জমির দাম আর কত হবে। ৫ লাখ টাকার কথা বলেছি উকিল শূন্য একটা বেশি বসিয়ে দিয়েছেন। উকিলের ভুলে সম্পদের পরিমাণ বেড়ে গেছে। এটা নিয়ে আপনারা নিউজ করেছেন। এখন খুঁজে তো দেখতে হবে এতো টাকা আমার আছে কিনা। মারামারি করে তো আর প্রার্থিতা পাওয়া যাবে না। আমি চেষ্টা করবো, না পারলে কিছু করার নেই।

সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হলে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় আসনের ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সই জমা দিতে হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে তা যাচাই করেন। হিরো আলমের জমা দেওয়া সমর্থনসূচক সইয়ের মধ্যে দুইজনের বিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights