রাহুলের ‌‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ শুরু ১৪ জানুয়ারি, বিজেপির কটাক্ষ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামী ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা। যার নেতৃত্ব দেবেন দেশটির কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। যদিও এই যাত্রার নামকরণ করা হয়েছে ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’। দেশের পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত প্রসারিত করবে এই পদযাত্রা। উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর থেকে শুরু হয়ে ২০ মার্চ তা শেষ হবে পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে।

রাহুল গান্ধীর এই ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ ১৪ টি রাজ্যের প্রায় ৮৫ টি জেলা কভার করবে। মণিপুর, নাগাল্যান্ড, আসাম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র মিলিয়ে প্রায় ৬,২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে এই ন্যায় যাত্রা।

১৪ জানুয়ারি মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে এই পদযাত্রার সূচনা করবেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
‘ভারত ন্যায় যাত্রা’র প্রদক্ষিণের জন্য একাধিক বাসকে কাজে লাগানো হবে। যাতে সর্বাধিক মানুষ এই যাত্রায় সামিল হতে পারে। তবে এই ন্যায় যাত্রার সময়কালে বিক্ষিপ্তভাবে হাঁটার ব্যবস্থাও রয়েছে।

বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম দফায় দক্ষিণ ভারতের কন্যাকুমারী থেকে উত্তর ভারতের কাশ্মীর পর্যন্ত যে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ হয়েছিল, তা ছিল ঐতিহাসিক।’ সেই ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ থেকে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে রাহুল গান্ধী এবার নতুন এক যাত্রা শুরু করছেন। এই যাত্রা সমাজের যুব, নারী এবং প্রান্তিক মানুষের সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে চলেছে।’ তার অভিমত ‘সবার জন্য ন্যায় চাই। এই লক্ষ্য নিয়েই এই যাত্রার নামকরণ করা হয়েছে।’

ভেনুগোপাল বলেন, ‘মণিপুরকে বাদ দিয়ে আমরা কীভাবে এই যাত্রা শুরু করতে পারি? আমরা মণিপুরের মানুষদের দুঃখের লাঘব করতে চাই।’

সিনিয়র কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ টুইট করে জানিয়েছেন, ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ মানুষকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করবে যে তাদের জন্য ‘অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং রাজনৈতিক ন্যায়বিচার এখনও উপলব্ধ আছে।’

যদিও এই যাত্রা নিয়ে বিজেপির কটাক্ষ, ‘মানুষ এর আগেও ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ প্রত্যাখ্যান করেছিল। বিজেপি মুখপাত্র নলিন কোহলি বলেছেন, ‘ভারতের জনগণ স্পষ্টতই ভারত জোড়ো যাত্রার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। তার কারণ, রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস এই পদ্ধতিতে ছলনা করতে পারে না। আসলে রাহুলের মতো নেতারা মনে করেছিল যে কিছু স্লোগান দিয়ে ভারতের জনগণকে বোকা বানানো যায়।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর শুরু হয় ভারত যাত্রার প্রথম পর্ব, তা শেষ হয় চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি। রাহুলের নেতৃত্বে কন্যাকুমারী থেকে জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর পর্যন্ত প্রায় ৪,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় ওই যাত্রা। ১৩০ দিনে মোট ১২টি রাজ্য প্রদক্ষিণ করে সেই যাত্রা। রাহুলের ওই ভারত যাত্রার পরে কর্ণাটক এবং হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বেশ প্রভাব পড়ে। দুই রাজ্যে নির্বাচনে জয়লাভের পাশাপাশি কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধানও বাড়ে।’

আগামী বছরের গোড়ার দিকে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি শাসিত সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’। আর এবার সেই নির্বাচনের প্রাক্কালেই রাহুলের এই ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’র ঘোষণা বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে কতটা উজ্জীবিত করে সেটাই দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights