সৌরজগতের প্রান্তে ভেসে বেড়াচ্ছে ১০ লাখ রহস্যময় মহাজাগতিক বস্তু
অনলাইন ডেস্ক
একটি নতুন গবেষণা বলছে, আমাদের সৌরজগতের প্রান্তে ১০ লাখের বেশি অজানা মহাজাগতিক বস্তু ভেসে বেড়াচ্ছে, যেগুলোর প্রতিটির আকার যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যাচু অব লিবার্টির সমান। গবেষণাটি এখনও পর্যালোচনার অপেক্ষায় থাকলেও এতে দাবি করা হয়েছে যে, এই বস্তুগুলো মূলত নিকটবর্তী তারকাপুঞ্জ থেকে এসেছে এবং মহাকর্ষীয় প্রভাবের মাধ্যমে আমাদের সৌরজগতে প্রবেশ করেছে।
গবেষকরা কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে বের করেছেন, আলফা সেন্টোরি তারকাপুঞ্জ থেকে ঠিক কতটা আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু আমাদের দিকে আসতে পারে। এতে দেখা গেছে, ১০ লাখেরও বেশি বস্তু, যেগুলোর ব্যাস ১০০ মিটারের বেশি, আমাদের সৌরজগতের বাইরের অংশে নিঃশব্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আলফা সেন্টোরি তারকাপুঞ্জ বর্তমানে আমাদের দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসছে এবং এটি আগামী ২৮,০০০ বছরের মধ্যে সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছাবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, তখন আমাদের সৌরজগতে আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু প্রবেশের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
এর আগেও আমাদের সৌরজগতে একাধিক অজানা বস্তু প্রবেশের নজির পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ‘ওউমুয়ামুয়া’, যা ২০১৭ সালে শনাক্ত হয়েছিল এবং এটি প্রথম আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু হিসেবে চিহ্নিত হয়। এরপর ২০১৯ সালে বিজ্ঞানীরা কমেট বোরিসভের সন্ধান পান, যা একইভাবে অন্য তারকাপুঞ্জ থেকে আমাদের সৌরজগতে প্রবেশ করেছিল।
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণু ২০২৪ YR4, সতর্ক বিজ্ঞানীরা
এই অজানা মহাজাগতিক বস্তুগুলোর পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা বর্তমানে নজর রাখছেন গ্রহাণু ২০২৪ YR4-এর ওপর, যার পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
প্রথমবার ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে নাসার অর্থায়নে পরিচালিত Asteroid Terrestrial-impact Last Alert System (ATLAS)-এর চিলি স্টেশন থেকে এই গ্রহাণুটি শনাক্ত করা হয়। তখন এটি পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা ১.৩ শতাংশ ধরা হয়েছিল, যা এক সপ্তাহের মধ্যেই বেড়ে ২.৩ শতাংশে পৌঁছায়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গ্রহাণুটির আকার আনুমানিক ১৩০ থেকে ৩০০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। যদিও এটি পৃথিবীর সভ্যতা ধ্বংস করার মতো শক্তিশালী নয়, তবে এটি একটি বড় শহরে আঘাত হানলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
তবে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে, অতীতেও অনেক গ্রহাণু সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও নতুন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সেগুলো ঝুঁকিমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও তথ্য বিশ্লেষণ করা হলে ২০২৪ YR4-এর ঝুঁকিও কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : এনডিটিভি