প্যানক্রিয়াটিক ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস রোগীর একটি অংশ সরাসরি প্যানক্রিয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই রোগটিতে ভোগেন। অর্থাৎ প্যানক্রিয়াসের বিটাকোষ, যা ইনসুলিন তৈরি করে তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ইনসুলিন উৎপাদন কমে যায় এবং ডায়াবেটিস হয়। এটিকে অপুষ্টিজনিত ডায়াবেটিস হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন হারে এ রোগের উপস্থিতি দেখা যায়। এ রোগটি সাধারণত বয়ঃসন্ধিকাল বা কৈশোরে শুরু হয়। ক্রনিক প্যানক্রিটাইটিসের লক্ষণ হিসেবেই এটি শুরু হয়। ক্রনিক প্যানক্রিটাইটিসের অন্যতম কারণ হলো- মদ্যপান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রোগটির কারণ শিশু বয়সে আমিষ জাতীয় খাদ্যের অভাব। যা শরীরের অন্য অনেক অঙ্গের গাঠনিক অস্বাভাবিকতা তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে প্যানক্রিয়াস বা অগ্নাশয়েরও স্থায়ী কাঠামোগত দুর্বলতা তৈরি করে। ফলে অগ্নাশয় হতে নিঃসৃৃত আমিষ খাদ্যের পাঁচক রসটি আক্রান্ত ব্যক্তির অগ্নাশয়ের আমিষ উপাদানকেই হজম করতে থাকে। এ অংশটার সঙ্গে অগ্নাশয়ের বিটা কোষের সহাবস্থান। ফলশ্রুতিতে বিটা কোষের পরিমাণ কমতে থাকে – ইনসুলিন উৎপাদন হ্রাস পেতে থাকে এবং ডায়াবেটিস হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। যেহেতু মানুষের পুষ্টির উন্নতি হয়েছে, এ রোগটির প্রবণতাও হ্রাস পেয়েছে। এ রোগটি অনেক ক্ষেত্রে জিনগত হতে পারে। রোগটি প্রথমত বয়ঃসন্ধিকালের কাছাকাছি সময়ে পেটের উপরের দিকে ডানপাশে অল্প-বিস্তর ব্যথা হিসেবে দেখা দেয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ক্রমশ ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে এবং ঘন ঘন দেখা দিতে পারে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *