নরসিংদীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬, আহত ১০
নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ছেলেসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে ১০ জন। শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শিবপুর উপজেলার শ্রীফুলিয়া এলাকায় ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরো ৭ জন।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরা উপজেলার মরজালের শিমুতলী এলাকায় বাস ও সিএনজির সংঘর্ষে সিএনজির ৩ যাত্রী নিহত হয়। আহত হয় আরো ৩ জন। খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ।
রায়পুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের বড়চর গ্রামের মো. কাসেম মিয়ার স্ত্রী দোলনা বেগম (৫৫), তার নাতি আরিয়ান (৭) ও বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের রানা মিয়া (১৮)। শিবপুরে নিহতরা হলেন, মাইক্রোবাসের চালক নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার সাবদীবাজার এলাকার সুভাস চন্দ্রের ছেলে সাগর চন্দ্র (৩২। যাত্রী চাঁদপুর জেলার মতলব থানার মুন্সীরকান্দি গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে এফাজুল হক (৫০) ও তার ছেলে মোস্তাকিম (১৮)।
আর আহতরা হলো, নিহত এফাজুল হকের স্ত্রী মুক্তা আক্তার (৪৫), ছেলে আশরাফুল প্রধান (১৪), মেয়ে ইলমা আক্তার (১২), মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার ফারুক হোসেন (৫০), হাসিদা বেগম (৪২), সানজিদা আক্তার (১৬) ও নূর মোহাম্মদ (৭)।
হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে মাইক্রোবাসে করে দুইটি পরিবার সিলেটে মাজার জিয়ারতে গিয়েছিলো। জিয়ারত শেষে তারা শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ ফিরছিলো। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শিবপুরের শ্রীফুলিয়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত থেকে আসা সিলেট গামী একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি একেবারে দুমড়ে মুচড়ে যায়। আর ঘটনাস্থলেই চালকসহ তিনজন নিহত হয়। পরে ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় ফায়ার সার্ভিস।
এর ৫ ঘণ্টা আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রায়পুরার মরজাল থেকে ৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি ভিটি মরজাল যাচ্ছিল। সিএনজিটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরা উপজেরার মরজাল শিমুলতলী এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে সিএনজি অটো রিক্সাটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ওই সময় ঘটনাস্থলেই এক নারীসহ সিএনজিতে থাকা ৩ যাত্রী মারা যায়। আহত হয় আরো ৩ জন। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে ভৈবর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. রায়হান বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ির ভেতর থেকে তিনজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করি। আর আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করি। পরে মরদেহগুলো হাইওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশের এস আই আবুল খায়ের বলেন, বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিং এর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা ট্রাক ও মাইক্রোবাস জব্দ করে থানায় নিয়ে এসেছি। আর মরদেহগুলো নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বজনরা বিনা ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছে, অনুমতি পেলে তাদে কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, ঘটনাস্থলে ২ জনসহ তিন জন মারা গেছে। ঘাতক বাসটি পালিয়ে গেছে। এঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।