খালিস্তান বিতর্কে ভারত-কানাডা বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত

অনলাইন ডেস্ক
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত রাখার কথা জানাল কানাডা। এর আগে, চলতি বছরের শুরুর দিকে দুই দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, শীঘ্রই ভারত এবং কানাডা প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করবে। সেই লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনাও চলছিল অটোয়া এবং নয়াদিল্লির মধ্যে। আসন্ন অক্টোবর মাসের গোড়ায় ভারতে আসার কথা ছিল কানাডার একটি বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিনিধি দলের। কিন্তু সেই সব কিছুই আপাতত স্থগিত রাখার কথা জানাল কানাডা।

বিভিন্ন ইন্ডিয়ান সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী- গত রবিবার জি-২০ সম্মেলনের শেষ দিনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে কড়া কথা শোনান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কানাডায় খালিস্তানপন্থীদের উদ্বেগ প্রকাশ করে মোদী জানান, ভারত বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আর যেভাবে কানাডার আশ্রয়ে থেকে এই ভারত বিরোধীরা দিনের পর দিন সংগঠিত অপরাধ করে চলেছে, তাতে কানাডার কাছেও বিষয়টি উদ্বেগের হওয়া উচিত বলে জানান মোদী। কারণ, তার মতে এই ধরনের ঘটনা দুইদেশের কূটনৈতিক সুসম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। আর তিনি বিশ্বাস করেন, পারস্পরিক সম্মানেই দুইদেশের মজবুত সম্পর্কের ভিত।

পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালোয়ের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কানাডায় চরমপন্থীরা বিচ্ছিন্নতাবাদকে উসকানি দিচ্ছে। সেই সঙ্গে ভারতের কূটনীতিকদের উপর হামলাও চালাচ্ছে। কানাডায় ভারতের দূতাবাসের ক্ষতিসাধন করছেন এই চরমপন্থীরা। শুধু তাই নয়, সেখানকার প্রবাসী ভারতীয় সম্প্রদায় এবং তাদের উপাসনা স্থলেও হামলা চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভারতের পরে সবচেয়ে বেশি শিখ ধর্মাবলম্বীর বাস এই কানাডাতেই। কিন্তু বার বারই সেই দেশে খালিস্তানপন্থী শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে কানাডা ভারতকে বাণিজ্যের জন্য আদর্শ জায়গা বলে অভিহিত করে বলেছিল, কানাডা এবং ভারত বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে পারস্পরিক স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে। কিন্তু বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্কে আগের ‘উষ্ণতা’ নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।

গত এক বছর ধরেই কানাডায় একের পর এক খালিস্তানি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে খলিস্তানিদের বিক্ষোভ থেকে শুরু করে, ভারতীয় সাংবাদিকের উপর হামলা, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার ঘটনাকে উদযাপন করতে মিছিলও বেরি করেছিল কানাডায়। এ ব্যাপারে মোডীর বক্তব্যের জবাবে ট্রুডো বলেন, কানাডা বরাবরই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের জন্য আলোচনা করে এসেছে। কানাডা তাদের মাটিতে কোনওরকম হিংসার ঘটনাকে প্রশ্রয় দেবে না। তবে একই সঙ্গে ট্রুডো জানান, এই ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে কানাডাকে বিচার করা উচিত নয়।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *