দেশ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে: মান্না
অনলাইন ডেস্ক
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বাংলাদেশ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। এই দেশ আমার দেশ নয়। যে দেশকে মা-বোনের রক্ত দিয়ে অর্জন করেছিলাম, তা এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। আমরা সেই দেশ চাই, যেখানে মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না, বিনা খাদ্যে মারা যাবে না। শেখ হাসিনা দেশটাকে নিজের ইচ্ছেমতো শাসন করছেন। তাদের থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য আমরা লড়াই করছি।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ‘আদিলুর-এলানের সাজা, সাইবার নিরাপত্তা আইন এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
সেমিনারে মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন। অথচ সরকার তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। ২০১৫ সালে আমার বিরুদ্ধে দুটো মামলা করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহ, সেনা বিদ্রোহে উসকানিসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগে। আট বছর পার হওয়ার পরও সরকার সেই মামলায় চার্জশিট দিতে পারেনি। অথচ মামলা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমাকে প্রথমে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। দুইদিন গুম করে রাখার পর গ্রেফতার দেখায় এবং সেই মামলায় ২২ মাস কারাগারে রাখে। এখনও প্রতিনিয়ত আমাকে সেই মামলাগুলোতে হাজিরা দিতে হয়। অভিযোগপত্র ছাড়াই কাউকে কারাগারে রাখা চূড়ান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন। এমনকি সরকার আমার পাসপোর্ট আটকে রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার মতো আমারও চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া প্রয়োজন। পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার জন্য আমি আবেদন করেছি কয়েক দফায়। অথচ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই আবেদনের ওপর শুনানি পর্যন্ত হয়নি। এভাবেই ক্ষমতাসীন সরকার দেশের বিচার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব সাংবিধানিক, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার হরণ করে একদলীয় শাসনপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু নিজের সুবিধা হাসিল করতে চায়। যারা আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এনেছিল, তারাই আবার ক্ষমতায় গিয়ে সেটাকে সম্পূর্ণ গিলে খেয়েছে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। তারা আসলে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র গড়তে চায়। আইনের শাসনের নামে এই ফ্যাসিবাদকে ভেঙে দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগের জমিদারি সম্পত্তি নয়।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুমসহ আরো অনেকে।