ঝিনাইদহে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে কুমড়া বড়ি

শীত শুরু হলেই ঝিনাইদহের গ্রামাঞ্চলে কুমড়া বড়ি বানানোর ধুম পড়ে যায়। গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু কুমড়া বড়ি গ্রামের নারীরা সারা বছরের জন্য তৈরি করেন বিভিন্ন তরকারির মধ্যে দিয়ে রান্না করে খাওয়ার জন্য। কিন্তু কুমড়া বড়ি এই প্রথম তৈরি করা হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। যা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে হচ্ছেন লাভবান।

সরেজমিন গিয়ে দেখা হয় শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার ওয়াহিদ হাসান নামে এক শিক্ষিত যুবকের সাথে। লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসার পাশাপাশি করেছেন কুমড়া বড়ি তৈরির কারখানা। বড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কালো মাসকালাই ডাল ও চাল-কুমড়া। ডাল ও কুমড়ার মিশ্রণ করে আগে মেশিনে পেস্ট করা হচ্ছে। এরপর শীতের সকালে নারীরা নেটের উপর ছোট ছোট করে বড়ি বসাচ্ছেন। সেগুলো রোদে ভাল করে শুকিয়ে প্যাকেট করে ঢাকা, খুলনা, চিটাগং ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

বাণিজ্যিকভাবে কুমড়া বড়ি তৈরি হওয়ায় বিভিন্ন জেলার মানুষরা এখন এই সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নিতে পারছেন। বড়ি তৈরির কারখানার খবর পেয়ে সেটি দেখতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এটি দেখার পর উদ্বুদ্ধ হচ্ছে অনেক যুবক। শিক্ষিত এই যুবক নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অনেকেরই করেছেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। বর্তমানে তার কারখানায় সার্বক্ষণিক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ৩০/৪০ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক। বাড়ির কাজের পাশাপাশি ২/৩ ঘণ্টা বড়ি তৈরি করে যা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন, তা দিয়ে ভালোই চলছে তাদের সংসার।
এ সম্পর্কে কারখানা মালিক ওয়াহিদ হাসান জানান, এটি মৌসুমী খাবার ও নতুন ব্যবসা হিসেবে দাঁড় করিয়েছি। প্রতিদিন ১০ মণ বড়ি তৈরি করতে খরচ হয় ৪৫ হাজার টাকা। সব খরচ মিটিয়ে তা থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লাভ হয়। এর পাশাপাশি বাকি সময়ে অন্যান্য ব্যবসার কথা ভাবছি।

বাণিজ্যিকভাবে কুমড়া বড়ি তৈরিতে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য সকল প্রকার কারিগরি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ঋণ দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ মো. আজগর আলী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *