বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্যাপন করা হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। মঙ্গলবার গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে একাডেমিক ভবনের সামনে সকালে শান্তির প্রতীক পায়রা এবং বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধন শেষে একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে আনন্দ র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নতুন ডরমেটরি ভবনের সামনে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে শেষ হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অত্যন্ত সফলভাবে তারা সারাদেশের অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়নসহ শিক্ষাপ্রশাসন পরিচালনা করছে। যদিও এই কাজ অত্যন্ত কঠিন এবং চ্যালেঞ্জের। দেশের ২২৫৭টি কলেজের শিক্ষাব্যবস্থাপনা, পরিচালনা পর্ষদ গঠন, মান উন্নয়নসহ নানাবিধ কাজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সামলাতে হয়। তবে আমাদের দেশের সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কারিগরি শিক্ষা, কর্মমুখী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো উচিত। কারণ এসব ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি সৃষ্টি হয়।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বক্তা শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘দেশের মানচিত্রসম বিস্তৃতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষতাভিত্তিক কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য অনেক নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করছি উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে এসব নব নব উদ্যোগ কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। আমরা রূপকল্প ২০৪১ নিয়ে এগোচ্ছি। আমরা আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। এটি এখন বাস্তব। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। সকল দিক থেকেই আমরা চৌকস হয়ে উঠবো। আমাদের সরকার, শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে স্মার্ট হবো। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আগে শিক্ষাখাতকে স্মার্ট করতে হবে। এজন্য সকল উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের আন্তর্জাতিক ও জাতীয় কতগুলো লক্ষ্য রয়েছে। সেগুলো আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অর্জন করতে সক্ষম হবো।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘বিজয়ের এই মাসে গৌরব এবং অহংকারের বীরত্বকে কাঁধে নিয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে একান্নতে পা দিয়েছি আমরা। বাংলার শৌর্য-বীর্য, গৌরবকে ধারণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে অদম্য গতিতে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলছে বাংলাদেশ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পার করছে। মূলত বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে গঠিত কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের আলোকে প্রতিষ্ঠিত হয় এই জাতীয় প্রতিষ্ঠান। মানচিত্রসম বিস্তৃতিকে ধারণ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি এমপি, সংসদ সদস্য শামসুন নাহার, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হাবিবুর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নাছিমা বানু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন। অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় সংসদ সদস্য ও সংগীত শিল্পী মমতাজ বেগম, সরকারি সংগীত কলেজসহ জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *