স্ত্রী হত্যার ১১ মাস পর পলাতক স্বামী আটক
মৃত্যুর ১১ মাস পর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেলে স্ত্রী আত্মহত্যা করেনি। শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার পারভীন আক্তারকে। তার ভাইয়ের করা হত্যা মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে রংপুর জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার লক্ষিপুর এলাকা থেকে ঘাতক আব্দুল আলীকে (৩৫) গ্রেফতার করে শুক্রবার দুর্গাপুর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। আব্দুল আলী দুর্গাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পলাশী গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরের আব্দুল আলী বিগত প্রায় ১২ বছর আগে কলমাকান্দার পাঁচকাটা গ্রামের পারভিন আক্তারের বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য নানাভাবে নির্যাতন করার কারণে ২০১৯ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন পারভীনের পরিবার। পরবর্তীতে দুই পরিবারের সমন্বয়ে মামলাটি আপস মীমাংসা করে। কিন্তু এরপর থেকে আবারো নির্যাতন শুরু করে স্বামী। অবশেষে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর স্বামীর বাড়ি থেকে পারভিন আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মনাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। সেইসাথে দুর্গাপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে রাখে। এরপরে দীর্ঘ ১১ মাস পর মৃত্যুটি আত্মহত্যা নয় বলে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন দেয় নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) একরামুল হাসান।
প্রতিবেদন হাতে পেয়ে গত বুধবার রাতে (২৮ ডিসেম্বর) নিহতের ভাই আব্দুস ছালাম বাদী হয়ে আব্দুল আলী সহ তিনজনকে আসামি করে দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দেয়া ঘাতক আব্দুল আলীকে দুর্গাপুর থানার উপ-পরিদর্শক সাদেকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে আটক করে।
দুর্গাপুর থানার উপ পরিদর্শক সাদিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আমরা মামলাটি দায়ের হওয়ার পরপরই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার বর্তমান লোকেশন শনাক্ত করে তাকে আটকের জন্য দ্রুত একটি টিম নিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় অভিযান চালাই। আসামি দীর্ঘদিন ধরে চৌদ্দগ্রামের লক্ষ্মীপুর গ্রামে গা ঢাকা ওখানের বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিতো।