ইউরোপের মোহ ছেড়ে সৌদিতে রোনালদো, কিন্তু কেন?

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ নয়, স্প্যানিশ লা লিগা নয়, ফরাসি কিংবা জার্মান লিগও নয়-এবার ইউরোপ থেকে সোজা সৌদি আরবে তরী ভেড়ালেন পর্তুগিজ তথা বিশ্ব ফুটবলের হালের অন্যতম সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো!

প্রশ্ন উঠতেই পারে ইউরোপের চাকচিক্যময় জীবন, রঙীন আলোর মায়াবী রাত ছেড়ে কেনো রোনালদো কট্টরতায় ঠাসা একটা দেশে বেদুইন তাবু গাড়লেন। এই আল নাসেরইবা কারা?

রোনালদোর আল নাসের বেছে নেওয়ার প্রধান কারণ অর্থই হবে, এমনটাই মনে করছেন ফুটবল বোদ্ধারা। কেউ আবার বলছে পড়ন্ত সময়ে থাকা রোনালদোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে পশ্চিমা ফুটবল ক্লাবগুলো।কারো মতে পাদপ্রদীপের আলো থেকে একটু দূরে থেকেই হয়তো পুনরুত্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন রন।
যদিও আল নাসের বেছে নেওয়ার কোনো ব্যাখ্যা এখনো দেননি রোনালদো। এবার দেখে নেওয়া যাক আল নাসের ক্লাবের কিছু খুটিনাটি বিষয়।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদভিত্তিক ক্লাব আল নাসের প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালে। ১৮ দলের সৌদি পেশাদার লিগে (এসএফএল) খেলে এই ক্লাব। গত মৌসুমে লিগে তৃতীয় হয় আল নাসের। চ্যাম্পিয়ন হওয়া আল হিলালের চেয়ে ৬ পয়েন্ট পেছনে ছিল তারা।

সৌদি লিগের দ্বিতীয় সফলতম দল এটি। ৯ বার তারা জিতেছে লিগ শিরোপা। সবশেষটি ২০১৮-১৯ মৌসুমে। ১৮ লিগ শিরোপার রেকর্ড রিয়াদভিত্তিক আরেক ক্লাব আল হিলালের। সৌদি আরবের নক আউট টুর্নামেন্ট ‘দা কিং’স কাপ’ ৬ বার জিতেছে তারা। তবে সবশেষটি ১৯৯০ সালে।

সৌদি লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা মাজেদ আব্দুল্লাহ খেলতেন আল নাসেরের হয়েই। সৌদি আরবের সাবেক এই স্ট্রাইকারের গোল ১৮৯টি, করেছেন মাত্র ১৯৪ ম্যাচেই। আল নাসেরের ঘরের মাঠ মারসুল পার্ক, যেটির ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার।

এশিয়ার শীর্ষ ক্লাব টুর্নামেন্ট এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কখনও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি আল নাসের। ১৯৯৫ সালে রানার্সআপ হওয়াই তাদের সেরা সাফল্য। সৌদি ক্লাবগুলি এই আসর জিতেছে ৬ বার। এর মধ্যে আল হিলাল জিতেছে চারটি, আল ইতিহাদ দুটি।

আল নাসের ক্লাবের কোচ এখন রুদি গার্সিয়া দায়িত্বে আছেন গত জুন থেকে। এর আগে লিল, এএস রোমা, অলিম্পিক মার্শেই, অলিম্পিক লিঁওর কোচ হিসেবে কাজ করেছেন ৫৮ বছর বয়সী ফরাসি এই কোচ। এসপিএলের ক্লাবগুলি সর্বোচ্চ ৮ জন বিদেশি নিবন্ধন করাতে পারে, এক ম্যাচের স্কোয়াডে রাখতে পারে সর্বোচ্চ ৭ জন।

আল নাসেরের এখনকার দলে বিদেশিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্যামেরুনের ভিনসেন্ট আবুবাকার। সম্প্রতি বিশ্বকাপে যিনি সার্বিয়া ও ব্রাজিলের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলে নজর কাড়েন। এছাড়াও কলম্বিয়ার অভিজ্ঞ গোলকিপার দাভিদ ওসপিনা ও একসময় ব্রাজিল জাতীয় দল ও বায়ার্ন মিউনিখে খেলা মিডফিল্ডার লুইস গুস্তাভো আছেন এই দলে।

চলতি মৌসুমে ১০ রাউন্ড শেষে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে আছে আল নাসের। শীর্ষে থাকা আল শাহাবের চেয়ে দুই পয়েন্ট পেছনে তারা। ২০২৩-২৫ মৌসুমের এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে হলে লিগ শিরোপা জিততে হবে তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *