উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জবি প্রতিনিধি
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর, আবাসন ইস্যুসহ তিন দফা দাবিতে ফের রাজপথে নেমেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে প্রকল্প পরিচালকের পদত্যাগ, উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানসহ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় এনে সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব প্রদান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত সুস্পষ্ট ঘোষণা প্রদান ও হস্তান্তর প্রক্রিয়ার রূপরেখা স্পষ্ট করতে হবে এবং অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান।
♦ তিন দফা দাবিতে ফের রাজপথ অবরোধে জবি শিক্ষার্থীরা
♦ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ভুয়া ভুয়া দুয়োধ্বনি শিক্ষার্থীদের
♦ উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান আন্দোলনরতদের
♦ মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে
এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আবাসন, কবে দিবা প্রশাসন?’, ‘প্রয়োজনে রক্ত নাও, তবুও মোদের হল দাও’, ‘প্রশাসনিক মুলা চাষ, আর্মি চাইলে সর্বনাশ’, ‘আর্মির হাতে দাও কাজ, যদি থাকে হায়া-লাজ’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে,’ ‘জগন্নাথ আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, সব সালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’, প্রশাসন ভুয়া ভুয়াসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেয়। এর আগে দুপুর সাড়ে ১১টায় ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে প্রধান ফটকে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। এরপর বিক্ষোভ মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্ক, শাঁখারীবাজার, রায়সাহেব বাজার হয়ে তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করে নেয়। এ সময় নয়াবাজার, গুলিস্তান, বংশাল, সদরঘাটসহ আশপাশের সব রুটের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে তাঁতিবাজার মোড়ে গাড়িতে আটকে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। বেশ কিছুক্ষণ পরে উপাচার্য গাড়ি থেকে বের হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি অতিক্রম করে পায়ে হেঁটে ক্যাম্পাসে আসেন। এর পরে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসে ফিরে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, ‘আমাদের দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নয়। আজকের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসলে আমরা আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত আবারও তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করব।’ আলোচনা প্রস্তাব নাকচ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংগঠক কে এম রাকিব বলেন, ‘আমাদের রাজপথের আন্দোলন আমরা রাজপথেই সমাধান করব। উপাচার্যের সভাকক্ষে কোনো আলোচনা হবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান থাকবে।’