কর অব্যাহতির সুবিধা প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রাজস্ব আয় বাড়াতে করমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহারসহ বেশকিছু খাতে নতুন করের প্রস্তাব দিয়েছেন। আবার কিছু খাতে কর সুবিধাও দিয়েছেন। কর অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা অনেক দিন ধরে কর অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করে আসছি। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত বর্তমানে সম্পূর্ণ কর অব্যাহতি সুবিধা ভোগ করছে এবং অনেক খাত হ্রাসকৃত হারে আয়কর প্রদান করছে। কর অব্যাহতির সুবিধার ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেলেও করের ভিত্তি অনেকাংশে সংকুচিত হচ্ছে।

কর অব্যাহতি যৌক্তিকীকরণ যেসব প্রস্তাব বাজেটে দেওয়া হয়েছে : হাইটেক পার্কে ব্যক্তি খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার হয়েছে। একইভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলে করমুক্ত সুবিধা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে এই সুবিধা অব্যাহত থাকবে। কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি তার কর অব্যাহতি পূর্ণাঙ্গ বা আংশিকভাবে সমর্পণপূর্বক নিয়মিত হারে কর পরিশোধ করতে পারবেন। কোনো ব্যক্তি কোনো একটি উৎসের আয়ের বিপরীতে কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদে কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত হলে উক্তরূপ উৎসের আয়ের বিপরীতে পুনরায় অন্য কোনোভাবে অন্য কোনো মেয়াদে কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত হবেন না এবং উক্তরূপ কোনো ব্যক্তি কোনো প্রকারের মার্জার, ডিমার্জার ও অধিগ্রহণের মাধ্যমে পুনর্গঠিত হলেও উক্তরূপ কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত হবে না। কোনো ব্যক্তি করদাতা কর্তৃক গৃহীত ৫০ লাখ টাকার অধিক কোনো মূলধনী আয় (গেইন ট্যাক্স) যা তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি বা তহবিলের শেয়ার বা ইউনিট হস্তান্তর হতে অর্জিত হয়েছে, আগে এটি করমুক্ত থাকলেও এখন থেকে তা করের আওতাভুক্ত হবে।

কর অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহারের পাশাপাশি কিছু খাতে করমুক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- উত্তরাধিকার, উইল, অসিয়ত এবং অবাতিলযোগ্য ট্রাস্টমূলে কোনো পরিসম্পদ অর্জিত হলে করমুক্ত সুবিধা পাবে; এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক গৃহীত যে কোনো দান বা অনুদান করমুক্ত সুবিধা পাবে। এতিমখানা, অনাথ আশ্রম ও ধর্মীয় উপাসনালয়কে গাড়ির অগ্রিম কর পরিশোধ হতে অব্যাহতি পাবে। কোনো দাতব্য ট্রাস্টের সুবিধাভোগী বা তহবিলের অংশগ্রহণকারী কর্তৃক আয়ের প্রাপ্ত অংশ ট্রাস্ট বা তহবিল কর্তৃক কর পরিশোধ করা হয়েছে তা করমুক্ত সুবিধা পাবে।
কর অব্যাহতি সুবিধা ছাড়াও বিভিন্ন খাতে করের হ্রাস-বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে। আমদানি পর্যায়ের শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন করসংক্রান্ত প্রস্তাব প্রণয়নের ক্ষেত্রে নিম্নর বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তা হলো, দেশীয় শিল্পের জন্য বিদ্যমান নীতিসহায়তা যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে এর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন সম্ভাবনাময় উৎপাদনমুখী খাতকে চিহ্নিত করে এর বিকাশে সহায়তা দেওয়া; আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন এবং উত্তরণ পরবর্তী সুযোগ কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা; দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানিমুখী শিল্পকে সহায়তা প্রদান করা; পণ্য খালাসে জটিলতা নিরসন এবং প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights