চট্টগ্রাম কলেজে অবাঞ্চিত হলেন ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজকে কলেজ ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে কমিটির অন্যান্য পক্ষের নেতা ও ছাত্রলীগ কর্মীরা।

সোমবার কলেজের ছাত্র সংসদ থেকে তাদের ছবি সরিয়ে নিয়ে তারা এই দুই নেতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। এ সময় মাহমুদুল-সুভাষের ছবি পোড়ানো হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়।

দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে শিবিরের আধিপত্য ছিলো এই ক্যাম্পাসে। ২০১৫ সালে ১৬ ডিসেম্বর কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শিবিরকে উৎখাত করে নিয়ন্ত্রণে নেয় ছাত্রলীগ। এরপর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি ও সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে কলেজ ক্যাম্পাসে নানা বিষয় নিয়ে সভাপতি সম্পাদকের সাথে বাকিদের বিবাদ লেগেই ছিলো।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে সভাপতি মাহমুদুলের উপর অনাস্থা জানিয়ে বেশিরভাগ নেতাকর্মী আলাদা হয়ে নিজেদের মতো রাজনীতি করে আসছিলেন। এরপর থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে যান না মাহমুদুল। তবে সাধারণ সম্পাদক সবুজ কলেজে গিয়ে নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছিলেন। গত রবিবার (১২ মে) তিনিও নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়ে কলেজ ছেড়ে যান। সোমবার বেলা ১১টার দিকে দুই নেতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কলেজের কর্মচারীদের উপর নির্যাতন, শিক্ষক বদলিসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন সভাপতি-সম্পাদক। তাদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হতে শিক্ষার্থীরা এক হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলে দুজনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে।’

কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সায়মন বলেন, ‘এটা একদিনে হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে সভাপতি-সম্পাদক সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের দমন পীড়ন চালিয়ে আসছেন। শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দিতে টাকা আদায়, কলেজের বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা আদায়সহ নানা অনিয়ম করে আসছিলেন। এ জন্য বাকিরা অতিষ্ঠ হয়ে তাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন। এই কর্মসূচিতে কমিটির প্রায় সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, ‘আমি নগর ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী। এ কারণে আমার সুনাম নষ্ট করতে কিছু পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতেছে। কলেজ ছাত্রলীগ পূর্ণাঙ্গ করার সময় অনেক চিহিৃত শিবির কর্মী পদ পেতে চেয়েছিলো। আমি বাধা দিয়েছি। এ কারণে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে এমন কর্মকাণ্ড করছে।’

এ ব্যাপারে জানতে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights