জিলহজ মাসে বিশেষ একটি আমল

শরিফ আহমাদ

জিলহজ মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। প্রথম ১০ দিন বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের হজ ও কোরবানি আদায় করতে হয়। নফল রোজা রাখতে হয়।

অন্যান্য আমলের প্রতি মনোযোগী হতে হয়। জিলহজের চাঁর ওঠা থেকে শুরু করে ঈদের দিন কোরবানির আগ পর্যন্ত চুল, নখ ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকতে হয়। এর মাধ্যমে হাজিদের সঙ্গে সাদৃশ্যতা প্রকাশ পায়। অর্জিত হয় বিশেষ ফজিলত। তাই এ ব্যাপারে সবার যত্নবান হওয়া উচিত।

সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের করণীয়

সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। কোরবানির সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হয়। শরীরের অবাঞ্ছিত লোম কাটার তাগিদ ইসলামে থাকলেও এই সময় চুল ও নখ কাটা নিষিদ্ধ।
এটি মুস্তাহাব একটি আমল। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তির কাছে কোরবানির পশু আছে সে যেন জিলহজের চাঁদ দেখার পর থেকে কোরবানি করা পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে। (মুসলিম, হাদিস : ৪৯৫৯; আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮২)
মুস্তাহাব এই আমল করার জন্য জিলহজ আগমনের আগেই চুল-নখ কেটে-ছেঁটে পরিপাটি হয়ে থাকা উচিত, যেন পরবর্তী সময়ে বেশি লম্বা হয়ে না যায়।

যাদের কোরবানি ওয়াজিব নয়

যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় তারাও আমলটি করতে পারে। হাদিসে বর্ণিত আছে—এটাই তাদের কোরবানি।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার প্রতি আজহার (১০ জিলহজ) দিন ঈদ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাকে আল্লাহ তাআলা এই উম্মতের জন্য (ঈদ হিসেবে) নির্ধারণ করেছেন। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করে, (হে আল্লাহর রাসুল) আপনি বলুন, (যদি আমার কোরবানির পশু ক্রয়ের সামর্থ্য না থাকে), কিন্তু আমার কাছে এমন উট বা বকরি থাকে, যার দুধ পান করার জন্য বা মাল বহন করার জন্য তা প্রতিপালন করি। আমি কি তাকে কোরবানি করতে পারি? তিনি বললেন, না; বরং তুমি তোমার মাথার চুল, নখ ও গোঁফ কেটে ফেল এবং নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করো। এটাই আল্লাহর কাছে তোমার কোরবানি। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮০)

নারী ও শিশুদের করণীয়

নারী ও শিশুরা এই ফজিলতপূর্ণ আমলে শামিল হতে পারে। তাদের আমলের প্রতি পিতা-মাতা উৎসাহিত করতে পারেন। সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেঈদের আমল থেকে এটাই প্রমাণিত হয়। ওলিদ বিন মুসলিম (রহ.) বলেন, আমি মুহাম্মাদ বিন আজলান (রহ.)-কে জিলহজের প্রথম দশকে চুল কাটা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বলেন, আমাকে নাফে (রহ.) বলেছেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এক নারীর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। ওই নারী জিলহজের প্রথম দশকের ভেতরে তার সন্তানের চুল কেটে দিচ্ছিল। তখন তিনি বলেন, যদি ঈদের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে, তাহলে ভালো হতো। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস : ৭৫২০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights