নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার পাঁচ উপজেলার অন্তত ১০ হাজার পরিবার। এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, রাস্তাঘাট। বিদ্যালয়গুলোতে পানি থাকায় বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রমও।
এ ছাড়া বাড়িঘরে পানি থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন পানিবন্দি মানুষজন। দফায় দফায় তিস্তার পানি হ্রাস-বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের।
রবিবার দুপুর ১২টায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয় ৫১.৯১ মিটার, যা বিপৎসীমার মাত্র ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে এ বছর দু’বার স্বল্পমেয়াদি বন্যার ভোগান্তিতে পড়লো তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা এলাকার মজমুল হক বলেন, গত তিনদিন ধরে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে রান্না করা, চলাচলসহ সকল কাজে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, এমনকি বাড়িতে পানি থাকায় ঘুমও হয় না।
একই এলাকার মল হাওয়া বেগম বলেন, বাড়িঘরে পানি থাকায় রান্না ও খাবার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। দুইটি বাচ্চা ও গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে কাটছে দিন। তাছাড়া রাতের বেলা পোকা-মাকড়ের (সাপ) উৎপাত শুরু হয়েছে। ভয়ে ঘুম হয় না।
জেলার সদর উপজেলার কালমাটি পাকারমাথার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বেড়ে রাস্তা তলিয়ে আছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। পানি কমে গেলে আবার নদীর ভাঙন শুরু হবে। নদীর পাড়ের মানুষ আমরা খুবই কষ্টে রয়েছি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, গত বছর ভারতের সিকিমের বাঁধ ভেঙে পানির সাথে পলি এসেছে, তিস্তার পানির ধারণ ক্ষমতা কমে এসেছে। তাই বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও পানি বৃদ্ধি পেলেই নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে। পানি আবার কমে গেলে ভাঙন শুরু হবে। ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শন করেছি। জেলা প্রশাসনের নিকট পর্যাপ্ত বরাদ্দ রয়েছে। দুর্ভোগে থাকা মানুষজনকে ত্রাণ সহায়তা, শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে।