বড় মনিরের বিরুদ্ধে রাজধানীর তুরাগ থানায় ধর্ষণ মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের বিরুদ্ধে রাজধানীর তুরাগ থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন এক গৃহবধূ। প্রিয়াংকা সিটি আবাসিক এলাকায় বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। অস্ত্রের মুখে তাকে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে গৃহবধূ অভিযোগ করেছেন। তবে বড় মনির ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন। গত শুক্রবার রাতে তুরাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। গতকাল এসব তথ্য জানান তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা আনোয়ার। তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) এক তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ জানান। পরে তুরাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তরুণীকে খুঁজে বের করে। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। আমরা বড় মণির ওই বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে এসেছি। সেগুলো বিশ্লেষণ করাসহ মামলার সার্বিক তদন্ত এগিয়ে চলেছে।
জানা গেছে, গোলাম কিবরিয়া বড় মণি টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মণির বড় ভাই। গোলাম কিবরিয়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতিরও মহাসচিব। এর আগে, এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে গত বছরের ৫ এপ্রিল টাঙ্গাইল সদর থানায় গোলাম কিবরিয়া বড় মণির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় মণির স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়। মামলায় গত বছরের ৯ অক্টোবর বড় মণিকে জামিন দেন আদালত। একই বছরের ১৮ নভেম্বর ওই ধর্ষণ মামলার বাদী কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঢাকার ভুক্তভোগী গৃহবধূ এজাহারে অভিযোগ করেন, তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। সেই সুবাদে তিনি বাবার সঙ্গে দক্ষিণখান এলাকায় বসবাস করেন। দুই মাস আগে বড় মণির সঙ্গে তার ফেসবুকে যোগাযোগ হয়। পরিচয়ের সুবাদে বড় মণি তাকে ছোট বোন বলে ডাকতেন। এরপর থেকে ভিকটিমের সঙ্গে বড় মণি ফোনে কথা বলতেন। একপর্যায়ে ভিকটিমকে বড় মণি জানান, তার বাড়ি টাঙ্গাইলে।
গত বহস্পতিবার রাত ১০টায় উত্তরা হাউজ বিল্ডিং মাসকট প্লাজার পেছনে এসে ভিকটিমকে ফোন দেন বড় মণি। তিনি বলেন, আপু আমি তো ঢাকায় এসেছি? তুমি কি আমার সঙ্গে একটু দেখা করতে পারবে? আমি সকালে টাঙ্গাইল চলে যাব। পরে ভিকটিম মাসকট প্লাজার পেছনে এসে বড় মণির সঙ্গে দেখা করেন। বড় মণি তার গাড়িতে ভিকটিমকে ওঠান। তার সঙ্গে কথাবার্তা শেষে ভিকটিমকে বাসার সামনে নামিয়ে দেন। এর পরদিন শুক্রবার বিকালে উত্তরা জমজম টাওয়ারের সামনে থাকতে ভিকটিমকে ফোন দিয়ে বলেন বড় মণি। সেই অনুযায়ী ভিকটিম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জমজম টাওয়ারের সামনে আসেন। এর ঠিক ১০-১৫ মিনিট পর বড় মণি রিকশাযোগে আসেন এবং ভিকটিমকে রিকশায় করে প্রিয়াংকা সিটি আবাসিক এলাকায় একটি ভবনের তৃতীয় তলায় নিজ ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। সেখানে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বড় মণি।