বাগেরহাটে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ
বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলাপয় কাননচকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাড়ে ২৫ কোটি টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ জুন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এখানের ৮৩ জনকে ৮৩টি ঘর প্রদান করলেও অদ্যবধি ঘরগুলো মেরামতের কাজ শেষ হয়নি। দুঃস্থরা কেউই উঠতে পারেননি ঘরে। গৃহহীন সুফলভোগীদের অভিযোগ এই ৮৩টি ঘর নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার, গাঁথুনী ও পলেস্তরায় কম সিমেন্ট দেওয়া এবং মেঝেতে পুরুত্ব কম দিয়ে ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। পলেস্তারা শুকানোর আগেই তড়িঘড়ি করা হচ্ছে রং। এ ছাড়া তাদের ভয় দেখিয়ে নির্মান কাজ করতে বাধ্য করছে। আর এ কাজ সরাসরি তদারকি করছেন চিতলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অপূর্ব দাস।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬৮ নং শৈলদাহ মৌজায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৮৩টি ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গত ৪ জুন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এখানের ৮৩ জন গৃহহীন ও ভূমিহীনকে জমিসহ ৮৩টি ঘর প্রদান করে কাগজপত্র বুঝে দেওয়া হয়। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সেমিপাকা প্রতিটি ঘরের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকা। সেই অনুযায়ী এই প্রকল্পে মোট ২৫ কোটি ২৭ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকার কাজ চলছে। আর এই নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এর সুফলভোগীরা। তারা জানান শুরু থেকে এ কাজ তদারকি করছেন চিতলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অপূর্ব দাস। তিনি যে ভাবেই বলেন, তারা সে ভাবেই কাজ করেন।
রীনা বেগম জানান, তার ঘরের জানালাই নেই। কাজ এখনও শেষ হয়নি। প্রতিদিন স্যারেরা আসতে বলে। কাজ করে আবার চলে যাই।
আলামিন মোল্লা বলেন, ‘ঘর দেবে বলে আমাদের প্রতিদিন আসতে বলে। কিন্তু এসে দেখি কোন কাজই শেষ হয়নি। আমরা এখন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছি।’
রানী বেগম, পেয়ারা, তামান্না আক্তার অজিফাসহ অনেকে বলেন, ‘কাজের মান একেবারে খারাপ হয়েছে। খোঁচা দিলে বালু ঝরে পড়ে। লোকাল ২নং ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। দরজা, জানালা মেশে না। কাঁচা প্লাষ্টারের উপরই রং করছে। এ ছাড়া আমাদের ভয় দেখিয়ে ইট নেওয়া, পায়খানার রিং বসানোর জন্য মাটি খোঁড়াসহ বিভিন্ন কাজ করতে বাধ্য করছে।’
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে চিতলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অপূর্ব দাস বলেন, ‘কাজ সিডিউল অনুযায়ী করা হচ্ছে। কোন প্রকার অনিয়ম করছি না। মিস্ত্রিদের কাছ থেকে কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য ওনাদের রোজ আসতে বলেছি। যেন রাজমিস্ত্রিরা ফাঁকি দিতে না পারে।’