আগামী শুক্রবার টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা শুরু

আফজাল, টঙ্গী

রাজধানীর সন্নিকটে টঙ্গীর ‘কহর দরিয়া’খ্যাত তুরাগ নদের তীরে আগামী শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বিশ্ব তাবলীগ জামাতের বার্ষিক মহাসম্মেলন। সারা মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মহাসম্মেলনের ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা। শুক্রবার শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব-ইজতেমার প্রথম পর্ব। এর পর ৪ দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। ২২ জানুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার উভয় পর্ব।

এ উপলক্ষে পুরো ময়দানে তাবলিগ জামাতের অনুসারী সদস্য, মাদ্রাসা, স্কুল কলেজের ছাত্র-শিক্ষক ও স্থানীয় জনগণ দূর থেকে এসে প্রতিদিন দলে দলে শত শত মুসল্লি স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মুসল্লিদের পারাপারে তুরাগ নদের ওপর ৫টি ভাসমান ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। আগত মুসল্লিরা জেলাওয়ারি খিত্তায় অবস্থান নিবেন। তুরাগ নদের তীরবর্তী ১৬০ একর জমি বিস্তৃত ইজতেমা ময়দান প্রস্তুতের কাজ শেষ পর্যায়। দেশ বিদেশি আগত মুসল্লিদের জন্য উত্তর পশ্চিমে তৈরি হচ্ছে বয়ান মঞ্চ। বয়ান মঞ্চের পশ্চিম পাশেই নির্মাণ হয়েছে বিদেশি মেহমানদের থাকার ঘর। বাকি কিছু কাজ আজকালের মধ্যে শেষ হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মুসল্লিরা পুরোদমে ময়দানে প্রবেশ করবেন। ইতোমধ্যে বিদেশি মেহমানরা আসতে শুরু করছেন এবং অনেকেই পথে রয়েছেন।

ইজতেমা ময়দান মুরব্বি ডা. কাজী সাহাবুদ্দিন বলেন, শেষ প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে, ইনশাল্লাহ ইজতেমা শুরুর আগেই ময়দানের সকল কাজ শেষ হবে। বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র ও তাবলীগের সাথীরা দ্রুতকাজ করছে। আগামী শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা। সৌদি আরব, জর্ডান, কাতারসহ বিভিন্ন দেশের বিদেশি মেহমান আসতে শুরু করছেন। দেশি-বিদেশি ইসলামী চিন্তাবিদ ঈমান, নামাজ কায়েম, জিকির, দিনের দাওয়াত, আখেরাতের জীবন ও তাবলিগ সম্পর্কে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক মূল্যবান বয়ান রাখবেন। মূল বয়ান সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ভাষায় তরজমা করা হবে।
গাজীপুর সিটি মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, বিশ্বখ্যাত এই ধর্মীয় ইবাদত অনুষ্ঠানে আগত মুসল্লিদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়া, পানি ও নিরাপত্তাসহ যাবতীয় বিষয়ে সুশৃঙ্খল রাখতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলো দেখাশুনার জন্য সিটির নির্বাচিত কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গাজীপুর পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে ইজতেমা ময়দান। ময়দানের চারপাশে ১২টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন ও সিসি ক্যামরো স্থাপন করা হয়েছে। আগত মুসল্লিদের সেবায় পোশাক ও সাদা পোশাকসহ বিভিন্ন বেশে সেবা প্রদান করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এমনকি র‌্যাবের পক্ষ থেকে আকাশ পথে হেলিকপ্টার এর মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে। নৌ-পথেও টহল টিম থাকবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights