‘ইরান যুদ্ধকামী নয়, তবে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত’, হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রকে

অনলাইন ডেস্ক

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি এক সাক্ষাৎকারে জোর দিয়ে বলেছেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান যুদ্ধকামী নয়, তবে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। ইরান যুদ্ধকে ভয় পায় না বলে তিনি স্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেছেন।

পার্সটুডের তথ্য বলছে, সংবাদ মাধ্যম ‘খাবারঅনলাইন’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “চিঠি লেনদেন কূটনীতির অংশ, কিন্তু একই সাথে তা চাপ এবং হুমকির অংশও হতে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আরাকচি আরও বলেছেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সব সময় যুদ্ধ এড়িয়ে চলে এবং যুদ্ধ চায় না, তবে ইরান যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং যুদ্ধকে ভয় পায় না। ইরানের পররাষ্ট্রনীতি অবশ্যই কূটনীতি এবং যুদ্ধ এড়িয়ে চলার ওপর ভিত্তি গড়ে উঠেছে, যদি যুদ্ধ অনিবার্য না হয়ে ওঠে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা আমেরিকার সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার কৌশল নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, যে পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ চাপ থাকে, সেখানে কোনও সুস্থ ও বুদ্ধিমান মানুষ সরাসরি আলোচনায় জড়ায় না।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করে বলেন, আমরা যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় রাজি হচ্ছি না, এর কারণ একগুঁয়েমি নয় বরং অভিজ্ঞতা ও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছি। বিশেষজ্ঞদের মত হলো, এখন যে পরিস্থিতি তাতে কিছু পরিবর্তন না এলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় প্রবেশ করা আর সম্ভব নয়।

ট্রাম্প নিশ্চয় চিঠির লিখিত জবাব আশা করছেন, ইরান কি লিখিত জবাব দেবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ট্রাম্পের প্রত্যাশার সাথে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই, আমরা আমাদের নিজস্ব স্বার্থে কাজ করি। যা কল্যাণকর সেটাই করা হয়। আরাকচি নিষেধাজ্ঞাকে অকার্যকর করা এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আলোচনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেন, ইরানের বেসরকারি খাতের সাথে আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও আইনি বাঁধা নেই, বাঁধাটা ঐ দিক থেকেই আসছে।

আব্বাস আরাকচি আরও বলেছেন, ইরানের বাস্তবতা এবং সক্ষমতা সম্পর্কে ইহুদিবাদীরা অন্যদের কাছে যা উপস্থাপন করেছে, বিশ্বের সামনে যা তুলে ধরা হয়েছে তা সঠিক নয়। ইরানের বাস্তবতা ও সক্ষমতা তার থেকে আলাদা। এটা নিশ্চিত যে, ইহুদিবাদীরা আমেরিকাতেও একই কাজ করছে। আমেরিকা এবং মার্কিন সরকারের সামনে ইরানকে দুর্বল হিসেবে চিত্রিত করার যে চেষ্টা চলে তা মিথ্যাচার। সময়ের সাথে সাথে ট্রাম্প এবং অন্যদের চিন্তা-চেতনায় এ বিষয়ে পরিবর্তন ও সংশোধন আসবে।

তিনি বলেন, আমি আশা করি তারা আরও যুক্তিসঙ্গত নীতি গ্রহণ করবে। দুই-তিন মাস আগে আমি একটা টুইট করেছিলাম। সেখানে বলেছিলাম ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে সর্বোচ্চ চাপের মুখে ইরান সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। যদি তারা এবারও সেই কাজ করে তাহলে ফলাফল একই রকম হবে। সর্বোচ্চ চাপের পরিবর্তে সর্বোচ্চ যুক্তির পথ অনুসরণ করা উচিত। এখন যেটা প্রয়োজন তা হলো বাস্তবতাকে সঠিক ভাবে চেনা ও জানা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights