এবি পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী বিতর্ক, রাজনীতিতে নতুনত্ব আনার প্রয়াস

রাজনীতিতে নতুনত্ব আনার প্রয়াস
রাজনীতিতে নতুনত্ব আনার প্রয়াসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নির্বাচনী বিতর্ক করেছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বিতর্কে, দলটির চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী তিন নেতা অংশ নেন। কেনো প্রার্থী হয়েছেন, নির্বাচিত হতে পারলে কী করবেন, ফলাফল যাই হোক মেনে নেবেন কী না; এসব প্রশ্নের জবাব দেন প্রার্থীরা। অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচারিত এই বিতর্কে তিন প্রার্থী দলের অভ্যন্তরীন নির্বাচনকে গণতন্ত্রের পথে অভিযাত্রা আখ্যা দিয়ে, ভোটের পরিবেশে সন্তোষ জানিয়েছেন। ঐক্য বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাবেদ ইকবালের সঞ্চালনায় বিতর্কে অংশ নেন তিন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। তারা হলেন, প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এ এফ সোলায়মান চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম আহ্বায়ক কর্ণেল (অব.) দিদারুল আলম। স্বাগত বক্তৃতা করেন এবি পার্টির প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. ওয়ারেসুল করিম।

গত ২৭ এবং ২৮ ডিসেম্বর এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদের ২১ পদে ভোটগ্রহণ করা হয়। এতে প্রার্থী ছিলেন ৬০ জন। আগামী ১০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনে চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ করা হবে। এবি পার্টির ২,৭০০ কাউন্সিলর চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন। বিতর্কে প্রার্থীরা কাউন্সিলরদের সামনে নিজেদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা, অতীত অবদান এবং প্রার্থিতার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

কেনো সভাপতি হতে চান- প্রশ্নে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এবি পার্টি চার বছরে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। দল গঠনের জন্য সুপরিচিত অনেকের কাছে গিয়েছি। যারা বলতেন ’নতুন রাজনীতি দরকার’। কিন্তু কেউ যোগ দেননি। সরকারের বাঁধা, গোয়েন্দা সংস্থার হুমকি, সামাজিক মাধ্যমে বুলিং ছিল। অনেকে যোগ দিয়েও হাত ছেড়ে দেন। সামনে আরও চ্যালেঞ্জ আসবে। সে কারণেই দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি।

একই প্রশ্নের জবাবে এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই দলের আহ্বায়ক পদ ছেড়েছিলেন, যাতে নির্বাচন প্রভাবিত না হয়। এবি পার্টি একক ব্যক্তির দল নয়। দেখতে চেয়েছি, পদত্যাগ করলে এবি পার্টি কেমন চলে। পদত্যাগের পর দেখলাম ভালোই চলছে কোন সমস্যা নাই।

একই প্রশ্নে কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বলেন, রাজনীতিতে আমি নতুন হলেও, ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ১০ বছর জেল খেটেছি। রাজনীতিতে নতুন হলেও, পেশাগত অভিজ্ঞতায় অপর দুই প্রার্থীর চেয়ে আমি অভিজ্ঞ।

নেতাকর্মীরা কেনো ভোট দেবে- প্রশ্নে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের কারণে তারা আমাকে ভোট দেবেন বলে আশা করছি।

একই প্রশ্নে এ এফ সোলায়মান চৌধুরী বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ আমিও করেছি। আড়াই শতাধিক উপজেলায় কমিটি করেছি আমরা। নেতৃত্বের সঙ্গে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক তৈরি করেছি। আগামী তিন বছরে বাংলাদেশের বৃহৎ দল হবে এবি পার্টি।

একই প্রশ্নে সালায়মান চৌধুরী বলেছেন, আজকের বিতর্কই তো প্রমাণ করে একটি গণতান্ত্রিক দল গঠন করতে পেরেছি। অনেক অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছে সরকার এবং সরকারি বাহিনী দ্বারা।

নির্বাচিত হলে আগামী নির্বাচনে কারো সঙ্গে জোট করবেন কী না- প্রশ্নে এ এফ সোলায়মান চৌধুরী বলেছেন, এবি পার্টিই দেশের প্রথম রাজনৈতিক দল যা অন্য সব দলের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। জোট নির্ভর করবে, এবি পার্টির নিজস্ব শক্তির ওপর। জোট হলে ছোট দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেতাকর্মীরা বড় দলে চলে যায়।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, উল্টোও হতে পারে। বড় দলের নেতাকর্মীরা আমাদের দলে চলে আসতে পারে, কৌশল ঠিক থাকলে।

নির্বাচিত হলে দলের পররাষ্ট্র নীতি কী হবে, বিশেষত ভারতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী কী হবে- প্রশ্নে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, অন্ধ বিরোধিতা নয়, সীমান্ত হত্যা, পানি বন্টনসহ যেসব অমিমাংসিত ইস্যুতে রয়েছে সেগুলোতে বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তিকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করবে এবি পার্টি। এবি পার্টি সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব নীতিতে বিশ্বাসী নয়। যারা বৈরী হবে, তাদের চোখে চোখ রেখে কথা বলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights