কুমিল্লায় এক মাসেও কমেনি পানি, বাঁধে ধস সিরাজগঞ্জে

প্রতিদিন ডেস্ক

দক্ষিণ কুমিল্লায় এক মাসেও নামছে না বন্যার পানি। টানা ভারী বৃষ্টিতে আবার পানি বেড়েছে। এতে বাড়ছে আতঙ্ক। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের মেঘাই বাঁধ ধসে ৮০ মিটার বিলীন হয়ে গেছে। ভারী বৃষ্টিতে পটুয়াখালী, খুলনা, বাগেরহাটে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। রাজশাহীতে ঝোড়ো বাতাসে উপড়ে পড়েছে গাছ। রাজবাড়ীতে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- কুমিল্লা : দক্ষিণ কুমিল্লার তিন উপজেলা লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটে এক মাসেও নামছে না বন্যার পানি। এদিকে তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে আবার পানি বাড়ছে। এতে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এদিকে দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভেঙে যাচ্ছে সড়ক। এ ছাড়া বাড়ছে রোগব্যাধি। জলাবদ্ধতা নিরসনে খালের বাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৫ আগস্ট দক্ষিণ কুমিল্লায় পানি বাড়তে থাকে। এতে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। এক মাসের বেশি সময় পার হলেও ঘরবাড়ি ও সড়কের পানি তেমন কমেনি। আবার পানি বাড়ছে। লাকসামের উত্তরদা ইউনিয়ন, গোবিন্দপুর ও আজগরা ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়। এ তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এখনো পানির নিচে রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মনপাল গ্রাম। গ্রামের অনেক সড়ক, বাড়ি ও দোকান এখনো পানির নিচে রয়েছে। মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ, সরসপুর, খিলা, লক্ষণপুর, বাইশগাঁও ইউনিয়নেও মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া, বক্সগঞ্জ, মৌকারা, বটতলী ও জোড্ডা পূর্ব পশ্চিম ইউনিয়নের মানুষ এখনো পানিবন্দি। সিরাজগঞ্জ : কাজিপুর উপজেলার মেঘাই পয়েন্টে যমুনা নদীর বাঁধে ধস নেমেছে। এতে বাঁধের ৮০ মিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। যমুনার ঘূর্ণাবতের কারণে শনিবার রাতে এ ধস নামে। এতে এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করছে।

পটুয়াখালী : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। তাই পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর (পুনঃ) তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পটুয়াখালীতে অবিরাম বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। শত শত মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।

এদিকে পটুয়াখালীর গলাচিপায় দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। শনিবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে রবিবার বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বিভিন্ন নিচু স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের, পুকুর ও আমন খেত। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমন চাষি ও বর্ষাকালীন সবজি চাষিরা।
রাজবাড়ী : বৈরী আবহাওয়ার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার বেলা ১১টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

খুলনা : দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে খুলনা নগরীর অধিকাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর ও সড়কের পাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ।

কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, কিছু জায়গায় উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় ড্রেনগুলোতে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হয়। এ ছাড়া প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে সময় লাগছে।

বাগেরহাট : বাগেরহাটে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ভেসে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে হাজার-হাজার চিংড়ি ঘের ও মাছের খামার। গত দুই দিন ধরে একটানা ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, রামপাল, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হাঁটুপানিতে ডুবে গেছে প্রধান প্রধান সড়ক।

রাজশাহী : রাজশাহীতে তিন দিন ধরে বৃষ্টির সঙ্গে বইছে ঝোড়ো বাতাস। জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সড়কে কমেছে লোকজনের আনাগোনা। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় কর্মজীবীরা বিপাকে পড়েছেন। আবহাওয়া অফিস বলছে, দু-এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ঝোড়ো বাতাসে রাজশাহী কলেজের একটি পুরনো স্বর্ণকুচি গাছ উপড়ে পড়েছে। গতকাল সকালে কলেজের হাজী মুহম্মদ মুহসীন ভবনের সামনের এ গাছটি উপড়ে পড়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights