কোহলিদের হারিয়ে আইপিএল শুরু চেন্নাইয়ের, জয়ের নায়ক মুস্তাফিজ

অনলাইন ডেস্ক

একজনের চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে প্রথম ম্যাচ, আরেকজনের আইপিএল অভিষেক। উপলক্ষ রাঙালেন দুজনই। চমৎকার বোলিং উপহার দিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন রাচিন রাভিন্দ্রা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে অনায়াসে হারিয়ে আইপিএলের শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করল চেন্নাই।

শুক্রবার (২২ মার্চ) আইপিএলের ১৭তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ঘরের মাঠে চেন্নাইয়ের জয় ৬ উইকেটে। চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে শুক্রবার বেঙ্গালুরুর ১৭৩ রান ৮ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।

বল হাতে চেন্নাইয়ের জয়ের নায়ক মুস্তাফিজ। নিজের প্রথম ২ ওভারে মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বেঙ্গালুরুকে নাড়িয়ে দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ফাফ দু প্লেসি, ভিরাট কোহলি, রাজাত পাতিদার ও ক্যামেরুন গ্রিনের উইকেট নেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার। ম্যাচ সেরাও হন তিনি।
আইপিএলে সাত আসরে, ভিন্ন পাঁচ দলের হয়ে খেলে মুস্তাফিজের সেরা বোলিং এটি। আগের সেরা বোলিং ছিল ১৬ রানে ৩ উইকেট, ২০১৬ সালে তার প্রথম আসরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে। অন্যদিকে, প্রথমবার এই টুর্নামেন্টে খেলতে এসে রান তাড়ায় ৩টি করে ছক্কা ও চারে ১৫ বলে ৩৭ রান করেন নিউজিল্যান্ডের তরুণ ব্যাটসম্যান রাভিন্দ্রা।

চেন্নাইয়ের নতুন অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের শুরুটা হলো দারুণ। আগের দিন মাহেন্দ্র সিং ধোনির জায়গায় এই ওপেনারকে অদিনায়কের দায়িত্ব দেয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে তাদের মাঠে এই নিয়ে টানা আট ম্যাচ হারল বেঙ্গালুরু। এই মাঠে বেঙ্গালুরু একমাত্র জয়টি পেয়েছিল সেই ২০০৮ সালে।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বেঙ্গালুরু। অধিনায়ক দু প্লেসির আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে প্রথম ৪ ওভারে তাদের রান ছিল বিনা উইকেটে ৩৭। এরপরই জোড়া ধাক্কা খায় তারা। পঞ্চম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসে মাত্র ৪ রান দিয়ে দু প্লেসি (২৩ বলে ৩৫) ও পাতিদারকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজ।

পরের ওভারে দিপক চাহারের শিকার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ‘গোল্ডেন ডাক’ এর তেতো স্বাদ পান অস্ট্রেলিয়ার বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন কোহলি ও গ্রিন। তাদের জুটি যখন জমে উঠছিল, তখনই আবার মুস্তাফিজের জোড়া আঘাত। দ্বাদশ ওভারে তিন বলের মধ্যে এই দুই ব্যাটসম্যানকেই বিদায় করে দেন বাংলাদেশের তারকা।

দুই মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচে ২০ বলে ২১ রান করেন কোহলি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১২ হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন তিনি। নড়বড়ে অবস্থান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে আনুজ রাওয়াত ও দিনেশ কার্তিকের ৫০ বলে ৯৫ রানের জুটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বেঙ্গালুরু। আনুজ ২৫ বলে ৩টি ছক্কা ও ৪টি চারে করেন ৪৮ রান। কার্তিক ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন।

রান তাড়ায় ৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটিতে সুর বেঁধে দেন রুতুরাজ ও রাভিন্দ্রা। রুতুরাজ বিদায় নেন ১৫ বলে ১৫ রান করে। রাভিন্দ্রার ঝড় থামে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে। পরের দুই ব্যাটসম্যান আজিঙ্কা রাহানে ও ড্যারিল মিচেল ২টি করে ছক্কা মারলেও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি। রাহানে ১৯ বলে ২৭, মিচেল ১৮ বলে করেন ২২ রান। এরপর ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাকিটা সারেন শিভাম দুবে ও রবীন্দ্র জাদেজা। দুবে ২৮ বলে ৩৪ ও জাদেজা ১৭ বলে করেন ২৫ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ২০ ওভারে ১৭৩/৬ (কোহলি ২১, দু প্লেসি ৩৫, পাতিদার ০, ম্যাক্সওয়েল ০, গ্রিন ১৮, আনুজ ৪৮, কার্তিক ৩৮*; চাহার ৪-০-৩৭-১, তুষার ৪-০-৪৭-০, থিকশানা ৪-০-৩৬-০, মুস্তাফিজ ৪-০-২৯-৪, জাদেজা ৪-০-২১-০)

চেন্নাই সুপার কিংস: ১৮.৪ ওভারে ১৭৬/৪ (রুতুরাজ ১৫, রাভিন্দ্রা ৩৭, রাহানে ২৭, মিচেল ২২, দুবে ৩৪*, জাদেজা ২৫*; সিরাজ ৪-০-৩৮-০, দায়াল ৩-০-২৮-১, জোসেফ ৩.৪-০-৩৮-০, কার্ন ২-০-২৪-১, মায়াঙ্ক ২-০-৬-০, গ্রিন ৩-০-২৭-২, ম্যাক্সওয়েল ১-০-৭-০)

ফল: চেন্নাই সুপার কিংস ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মুস্তাফিজুর রহমান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

What do you like about this page?

0 / 400

Verified by MonsterInsights