গাজার ‘মালিকানা’ নিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি গাজা উপত্যকা কিনতে এবং সেটির মালিকানার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার কিছু অংশ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশকে পুনর্গঠনের জন্য অনুমতি দেবেন।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যম দুটি জানায়, স্থানীয় সময় রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নিউ অরলিন্সে যাওয়ার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন ট্রাম্প।কয়েকজন সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য বরাদ্দ বিমান এয়ারফোর্স ১-এ চেপে ওয়াশিংটন থেকে লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে গিয়েছিলেন তিনি। চলমান বিমানেই সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেছেন, আমি গাজা কিনতে এবং মালিকানার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি পুনর্নির্মাণের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে গাজার কিছু অংশ আমরা দিতে পারি। আমাদের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে অন্যরা এটি করতে পারে। তবে আমরা এটির মালিকানা নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দীর্ঘ এবং টানা সামরিক অভিযানের জেরে গাজা বর্তমানে বসবাসের অযোগ্য বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

পাশাপাশি তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ক্রয়ের পর গাজার উন্নয়নে যদি কোনো রাষ্ট্র বিনিয়োগ করতে রাজি হয়, তাহলে সেই রাষ্ট্রকে স্বাগত জানানো হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, গাজা উপত্যকাটি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বর্তমানে সেটি বসবাসের অযোগ্য। বর্তমানে সেখানে যারা আছেন, তারা ব্যাপকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু আমরা এই ভূখণ্ডটিকে খুব সুন্দর এবং উন্নতভাবে গড়ে তুলতে পারি। অন্যান্য দেশ যদি এ কার্যক্রমে অংশ নিতে চায়, আমরা তাদেরও স্বাগত জানাব। এটা খুবই সুন্দর একটি শহর হবে এবং সারা পৃথিবী থেকে লোকজন এখানে বসবাস করতে আসবে।

গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের অন্য জায়গায় স্থানান্তরের ইঙ্গিতও দিয়েছেন ট্রাম্প। এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, (গাজায় বসবাসরত) ফিলিস্তিনিদের প্রতিও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তারা যেন নিরাপত্তাপূর্ণ পরিবেশে শান্তির সঙ্গে সবার সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা তাদেরকে আমাদের দিতে হবে। তাদের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে তারা হত্যার শিকার হবে না। এই মুহূর্তে তারা যেখানে বসবাস করছে, সেটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং অনিরাপদ জায়গা।

গাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না— এ প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমাকে এ ব্যাপারটা দেখতে হবে। আমরা প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকজনকে গ্রহণ করি। কিন্তু তাদের ব্যাপারটি একটু ভিন্ন। গাজা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগলিক দূরত্ব অনেক এবং এতদূর আসাটা তাদের জন্য কষ্টকর হবে।

তিনি বলেন, আমার মতে তাদের এমন কোনো এলাকায় স্থানান্তর করা উচিত, যেখানকার পরিবেশের সঙ্গে তারা পরিচিত এবং যেখানে খাপ খাওয়ানো তাদের জন্য সহজ হবে। জর্ডান কিংবা মিসর এগিয়ে আসতে পারে। সৌদি আরব ও অন্যান্য ধনী দেশ এই ফিলিস্তিনিদের আবাসন ও বসবাসের জন্য অর্থব্যয় করতে পারে। তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। সেখান থেকে সামান্য কিছু অর্থ যদি তারা ব্যয় করে, তাহলে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ জীবন কাটাতে পারবে।

ট্রাম্প বলেন, আপনারা গাজাকে একটি বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ রিয়েল এস্টেট সম্পদ হিসেবে কল্পনা করতে পারেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ধীরে খুব ধীরে এই ভূখণ্ডের মালিকানা গ্রহণ করবে। আমরা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনব এবং যে যুদ্ধবিধ্বস্ত অংশটির কারণে মধ্যপ্রাচ্যে এত এত সমস্যা, সেই গাজা উপত্যকা আমার গ্রহণ করব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

What do you like about this page?

0 / 400

Verified by MonsterInsights