চট্টগ্রামে ছিনতাই আতঙ্ক
মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম
ছিনতাই আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। রাতে কিংবা দিনে অলিগলিতে অস্ত্র ঠেকিয়ে সমানতালে চলছে ছিনতাই। বাধা দিতে গিয়ে রক্তাক্ত হচ্ছে ভুক্তভোগীরা। এমননি ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও রয়েছে। এদিকে, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)-এর দাবি, ছিনতাই ঠেকাতে সর্বাত্মক কাজ শুরু করেছে তারা। ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধির কারণ জানতে সিএমপির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সবচেয়ে বেশি আঘাত এসেছে পুলিশের ওপর। সরকারের পতনের পর সিএমপির সিংহভাগ থানায় আক্রমণ হয়েছে। লুট হয়েছে অস্ত্র। এতে করে পুলিশের সঙ্গে জনগণের মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এরপর থেকেই পুলিশ স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে চলে যায়। মাঠে অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। আর এ সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে ছিনতাইকারীসহ অপরাধী চক্রগুলো। ফলে তারা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। যতদিন মাঠপর্যায়ে পুলিশ পুরোপুরি সক্রিয় না হবে ততদিন ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য থামানো কঠিন। জানা যায়, ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অলিগলি। দিনদুপুরে প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে রাত এবং ভোরেও। রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি চালিত টেক্সি থামিয়ে কিংবা পথচারীদের গতিরোধ করে একের পর এক ঘটছে ছিনতাই। বাদ যাচ্ছে না গণপরিবহনে থাকা যাত্রীরাও। ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করতে গিয়ে গত মঙ্গলবার আক্রান্ত হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য।
এদিকে পুলিশের দাবি, ছিনতাইকারী এবং ছিনতাই-প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে কাজ শুরু হয়েছে। ছিনতাই বন্ধে পুলিশের তৎপরতা প্রসঙ্গে সিএমপির জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীতে ছিনতাইকারীদের অপতৎপরতা থামাতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে থানায় থানায় অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ছিনতাইকারীদের।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘মাঠে সক্রিয় ছিনতাইকারীদের তালিকা তৈরি করতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। চিহ্নিত করা হচ্ছে ছিনতাইয়ের স্পটগুলোও।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের শেষের দিকে ৬০৩ জন ছিনতাইকারীর একটি তালিকা তৈরি করে সিএমপির গোয়েন্দা শাখা। তালিকায় থাকা ছিনতাইকারীদের মধ্যে সক্রিয় ছিনতাইকারীর সংখ্যা ৫০০ জন, আর নিষ্ক্রিয় হিসেবে ৪৩ জনের নাম রয়েছে। এ ছাড়া বাকিদের নাম, আগের ঠিকানা ও মামলার সংখ্যা উল্লেখ করা হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় গিয়ে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।