চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপনির্বাচনে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর-ভেলাহাট-নাচোল) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সংসদ উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে গত সোমবার (১৬ জানুয়ারি) প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই প্রচারে নেমে পড়েছেন এ দু’টি আসনের ৮ জন প্রার্থী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মুহাঃ. জিয়াউর রহমান (নৌকা), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ খুরশিদ আলম বাচ্চু (মাথল), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক (লাঙ্গল), বিএনএফের মোঃ নবিউল ইসলাম (টেলিভিশন) এবং জাকের পার্টির মোঃ গোলাম মোস্তফা (গোলাপ ফুল)।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল ওদুদ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী গত পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী হয়ে বহিস্কৃত সাবেক যুবলীগ নেতা মোঃ সামিউল হক লিটন (আপেল) এবং বিএনএফের কামরুজ্জামান (টেলিভিশন)।
এদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুহাঃ জিয়াউর রহমান এবং আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ আলম বাচ্চু নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুহাঃ জিয়াউর রহমান বলছেন, আগের সংসদ সদস্য বিএনপির হওয়ায় তিনি এলাকার উন্নয়নে তেমন কোন ভূমিকা রাখতেই পারেননি। তাই এবার তাকে নির্বাচিত করা হলে তিনি আগের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করতে পারবেন। অন্যদিকে খুরশিদ আলম বাচ্চু নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে ভুমিকা রাখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বর্তমানে তাদের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার বিভিন্ন এলাকায় শোভা পাচ্ছে।
এদিকে এই আসনে আরও ৩জন প্রার্থী থাকলেও তাদের নির্বাচনী তৎপরতা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। তবে মনোনয়নপত্র বাছাইকালে বাতিল হওয়া স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার উচ্চ আদালত গতকাল মঙ্গলবার তার প্রার্থীতা ফিরে পেলেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা না আসায় তাকে এখনও প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন সহকারি রিটার্নিং অফিসার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ মোতাওয়াক্কিল রহমান। কিন্তু এলাকার লোকজন মনে করছেন তিনি প্রার্থী হলেও তার দিকে ভোটারদের খুব একটা টানতে পারবেন না। কারণ রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। যদিও পরে তাকে সাধারণ ক্ষমা করা হলেও এলাকায় তিনি বিতর্কিত হয়ে রয়েছেন।
অপরদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোঃ আব্দুল ওদুদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন দলবল নিয়ে দিন রাত নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। গণসংযোকালে আব্দুল ওদুদ তার আমলে হওয়া এলাকার উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলছেন, গত ৪বছর এই আসনে বিএনপি’র সংসদ সদস্য থাকায় তিনি কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। তাই এবার তাকে নির্বাচিত করা হলে, আগের মতই এলাকার উন্নয়ন হবে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন বলছেন, তিনি বয়সে তরুণ হওয়ায় তাকে নির্বাচিত করা হলে এলাকার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবেন। বর্তমানে এলাকার অলিগলিতে এই দুই প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে। তবে এই আসনে বিএনএফের প্রার্থী কামরুজ্জামানের প্রচারণা এখনও দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, প্রার্থীরা বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বললেও ভোটাররা বলছেন, যিনি এলাকার উন্নয়নে অতীতে ভুমিকা রেখেছেন এবং আগামীতেও রাখতে পারবেন তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা হবে। তবে শেষ পর্যন্ত কে জয়লাভ করছেন তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।