জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নবীনদের অনুভূতি ও প্রত্যাশা

বিশ্ববিদ্যালয় এমন এক বিদ্যাপীঠ যেখানে হয় পুরোনো জ্ঞানের চর্চার আর নতুন জ্ঞানের উদ্ভাবন। আর এই ধারা চলতে থাকে একদল তরুণ মেধাবী আর উদ্যমী শিক্ষার্থীদের হাত ধরে। তাই, এই শিক্ষার্থীদের দলে যোগ দিতে প্রতি বছর হাজারও তরুণ তরুণী এক কঠিন ভর্তিযুদ্ধে উত্তির্ন হয়ে যুক্ত হয় হাজারও স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনে চাপা থাকে একরাশ আবেগ আর অনুভূতি। থাকে কতশত প্রত্যাশা। এমনই কিছু নবীন জবিয়ানদের অনুভুতি ও প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন আলোচিত বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও ফিচার লেখক জুনায়েদ মাসুদ।

জবি আমার অগ্রযাত্রার সারথি

১৯৫৮ সালে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা সেই প্রতিষ্ঠানটি আজ দেশের স্বনামধন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। যার আশেপাশে ঘিরে রয়েছে পুরান ঢাকার হাজারো ঐতিহ্য। জবির সংস্পর্শে এসে আজ এসব ঐতিহ্য দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। আমাদের জবির আয়তন ছোট হলেও জবিয়ান পরিবারের পরিসর অনেক বড়। শিক্ষকদের ভালবাসা ও বড় ভাই- বোনদের স্নেহে যেন নিজেকে আবৃত করে রেখেছি। জবিয়ান পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। আমরা নবীন জবিয়ান , আমাদের পদচারণায় মুখরিত জবি। জবির এই মুখরিত হওয়াটাকে সারাজীবন ধরে রাখতে চায়। সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে জবির বুকে নক্ষত্র হয়ে জ্বলতে চায়। আর সেই নক্ষত্রের আলোয় উৎসাহিত হবে অনাগত জবিয়ান। আমি গর্বিত , আমি জবিয়ান।

শাহানাজ পারভীন
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রাণের স্পন্দন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

‘এডমিশন’ শব্দটা শুনলেই যেন মানসপটে ভেসে ওঠে ইতিহাসের পাতায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অক্ষরে লিখে থাকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকদের মতো বিভীষিকাময় শত শত রাত্রি যাপন এর কথা। উচ্চ মাধ্যমিক এর গন্ডি পার হতে না হতেই যে যুদ্ধটা শুরু হয়, সেটা যদিও কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষিত যুদ্ধ নয়,তবে মনের সাথে যুদ্ধ করা সব যোদ্ধাদের কাম্য নয়। ঠিক তেমনই এক যুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষা।
ঢাকায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে জবির নৃবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলাম। শুনেছি সপ্নবাজদের এক আতুরঘর এই বিশ্ববিদ্যালয়। নিজেকে স্বপ্নবাজদের দলে সামিল করতে পেরে আনন্দিত। ছোট ক্যাম্পাস, আবাসনহীন, খেলার মাঠ নেই ইত্যাদি নানান সমস্যা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষাগত মানের দিক দিয়ে দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। হাজার তরুণকে স্বপ্ন দেখায়
আমিও সপ্ন দেখছি সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে দেশ ও দশের হয়ে কাজ করার।

ফারুক আল নাসির
শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

অনুভূতির অন্তরালে জবির হাতছানি

এই নিবন্ধটি আমার প্রিয় ভার্সিটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমার গভীর স্নেহ এবং প্রশংসার একটি প্রমাণ। বাংলাদেশের ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৮৬৮ সালের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাথে সুউচ্চ। এটি ধারাবাহিকভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটি।একজন গর্বিত ছাত্র হিসাবে, এই প্রতিষ্ঠানটি যে অসাধারণ পরিবেশ এবং সুযোগগুলি অফার করে তা আমি নিজেই অনুভব করার বিশেষাধিকার পেয়েছি। আমি প্রতিনিয়ত উজ্জ্বল মন এবং প্রতিভাবান ব্যক্তিদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হই যারা আমাকে ঘিরে আছে। আমি যখন করিডোর দিয়ে হাঁটছি এবং ক্যাম্পাসে ব্যস্ত জীবন প্রত্যক্ষ করছি, তখন আমি গর্ব এবং কৃতজ্ঞতার অনুভূতি অনুভব করতে পারি। ক্যাম্পাসটি একটি দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে উঠেছে, একটি অভয়ারণ্য যেখানে আমি অনুপ্রাণিত বোধ করি। আমার কাছে এই প্রতিষ্ঠানটি নিছক শিক্ষার জায়গা নয়; এটি জ্ঞান, আবেগ, এবং বৃদ্ধির একটি অভয়ারণ্য।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় আমার হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান ধরে রেখেছিল, রেখেছে এবং রাখবে।

মো: আলিফ ইমতিয়াজ
শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

ভর্তি যোদ্ধার স্বপ্ন ছোঁয়া।

শিক্ষাজীবনের দীর্ঘ সময় পারি দিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রস্তুতি নেই। এটাকে ভর্তি প্রস্তুতি বললে ভুল হবে। রীতিমত একটা যুদ্ধ বলা যায়। লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের মেধাতালিকায় পেছনে ফেলে দেশসেরা জগন্নাথে চান্স পাওয়ার অনুভূতিটা এমন যেনো একজন মায়ের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জন্ম নেয়া নবজাতকের মুখ! এই অনুভূতি নিজের অন্তর আত্মা থেকে শুরু করে সমগ্র শরীরে এক আলাদা খুশির শিহরন জাগিয়ে তুলে। নতুন কিছু করা, হবার এবং নতুন ভাবে বাঁচার এক রাস্তা। নিজের দেখে আসা এতদিনের স্বপ্নকে ছুটে পড়ার এক আকর্ষণ নিজের মনকে জাগিয়ে তোলে। জবি চিরতরেই মেধাবীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে মানুষের স্বপ্ন গুলোকে বাস্তবায়ন করার এক কার্যকরী মাধ্যম হিসেবে, একদিন বিশ্ব মঞ্চে মেধাবীদের নিয়ে মাথা উচু করে দারাবার মত যোগ্যতা হবে এটাই প্রত্যাশা।

মোহনা আক্তার
শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

জবি আমায় স্বপ্ন দেখায়

প্রতিদিন হাজারো স্বপ্ন যে জায়গায় লালিত হয় বলছিলাম সেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। বাংলাদেশে পবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা আসলে তার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। আলহামদুলিল্লাহ, আমি এখন জবিয়ান হতে পেরেছি। এখানে আমি দেখেছি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির শিক্ষার্থীদের মাঝে গড়ে ওঠা ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের প্রাগাঢ় হৃদ্যতার বন্ধন। এখানে আমি দেখেছি জবি এর খ্যাতি ও পড়ালেখার মনোরম পরিবেশে। অল্পদিনেই প্রিয় ক্যামপাসের সঙ্গেই জড়িয়ে গেছে – আবেগ, অনুভূতি, মায়া, মমতা আর ভালোবাসা।
পরিশেষে সকলের নিকট দোয়া প্রার্থী যাতে জবি এর নাম আরো উজ্জ্বল, উজ্জীবিত করে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করতে পারি।

ইকবাল হোসেন
শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

আকাঙ্ক্ষা যেখানে পূর্ণতা পায়

সবার স্বপ্ন থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। পরিচিত অনেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। তারা যখন বিশব্বিদ্যালয়ের স্মৃতি , আমি অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে শুনতাম। আমার হৃদয় নাড়া দিয়ে যেত। আর ঠিক তখনই খুব করে নিজের মধ্যে একটা সংকল্প তৈরী করি যে না আমাকেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে! তখনকার বুনা স্বপ্ন আজ বাস্তব রুপে আমার দারপ্রান্তে। আজ আমি জবিয়ান। আমি শুনতে পাই এটি আবেগের উৎফুল্লের, উৎকন্ঠার এবং গৌরবের যা তুৃমি অর্জন করেছো যা তুমি ছুঁতে পেরেছো। আমি সেই সোনালী দিনের অপেক্ষায় যেদিন আমার বিশ্ববিদ্যালয় শুধু দেশ নয় বরং বিশ্ব মঞ্চে অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হবে। সেই লক্ষে আমি কাজ করে যেতে চাই আমার শ্রদ্ধেয় সিনিয়র এবং শিক্ষকদের হাত ধরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights